বাংলাদেশে একদিনে অর্ধশতাধিক নিহতের পর কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করেছে সরকার। চলমান আন্দোলনকে ঘিরে গতকাল (শুক্রবার) ভয়াবহ সহিংসতায় একদিনে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর সরকার কারফিউ জারি এবং সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন।
গতকাল (শুক্রবার) মধ্যরাতে রাতে কারফিউ জারির ঘোষণার পরে আজ (শনিবার) সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা জানানো হলেও বেলা একটা পর্যন্ত চট্টগ্রামের শহরে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি। নগরের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও শহরে পেট্রোলিং করছে বিজিবি। এছাড়া, বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহীতেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি।
শুক্রবার নিহত অর্ধশতাধিক
আজ (শনিবার) প্রকাশিত জাতীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, সারাদেশে শুক্রবারের সহিংসতায় অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত চারদিনের সহিংসতায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে পত্রিকাগুলো উল্লেখ করেছে।
তবে নিহতের সংখ্যা নিয়ে পত্রিকাগুলোতে তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। প্রথম আলো পত্রিকা লিখেছে, শুক্রবার ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে নিহত হয়েছে ১০৩ জন।
শুক্রবার অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যুর খবর নিয়ে শিরোনাম করেছে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার। তবে বণিক বার্তায় ৫৮ জনের মৃত্যুর খবর দেয়া হয়েছে।
আর সমকাল পত্রিকায় বলা হয়েছে, শুক্রবারের সহিংসতায় ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিউএজ পত্রিকা ৬৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।
ঢাকায় ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল নিহত হয়েছে ৬০ জন। মঙ্গলবার থেকে মৃতের সংখ্যা ১০৫ জনে পৌঁছেছে।
কারফিউ’র পরিপত্র জারি
দেশব্যাপী কারফিউ এবং সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী শান্তি শৃঙ্খলারক্ষা ও জন নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী আজ হতে সান্ধ্য আইন কার্যকর করা হলো।
জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার এই প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশ বাস্তবায়ন করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েনের জন্যও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানানো হয়েছে পরিপত্রে।
কারফিউ বা সান্ধ্য আইনের সময়সীমা এবং শর্ত কী হবে তাও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ কমিশনার নির্ধারণ করবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ আহমেদ।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০