অলিম্পিক গেমসের আগে প্যারিসের শরণার্থীদের অসহায়ত্ব ঢেকে রাখার ফরাসি প্রচেষ্টা
(last modified Sun, 28 Jul 2024 08:37:43 GMT )
জুলাই ২৮, ২০২৪ ১৪:৩৭ Asia/Dhaka
  • অলিম্পিক গেমসের আগে প্যারিসের শরণার্থীদের অসহায়ত্ব ঢেকে রাখার ফরাসি প্রচেষ্টা

পার্সটুডে- ফরাসি মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, অলিম্পিক গেমস শুরুর একই সময়ে অভিবাসীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার এই গেমসের আইনে বর্ণিত মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি করেছে; কারণ ওই আইনে ‘মানবীয় মর্যাদা, বন্ধুত্ব এবং সমতা’র কথা বলা হয়েছে।

গ্রীষ্মকালীন প্যারিস অলিম্পিক-২০২৪ শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে ফরাসি সরকার এক চরম বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে প্যারিসে বসবাসরত অভিবাসী নাগরিকদেরকে রাজধানী শহর থেকে ধরে ফ্রান্সের ছোট শহরগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে।  প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটির জনগণ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পার্সটুডে ফার্সি জানাচ্ছে, যেসব ছোট শহরে এসব অভিবাসী নাগরিককে পাঠানো হয়েছে সেসব শহরের নাগরিকরা এ ব্যাপারে চরম উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন:  গ্রীষ্মকালীন প্যারিস অলিম্পিক-২০২৪ শুরু হওয়ার আগে প্যারিস শহরকে ‘নিট এন্ড ক্লিন’ দেখানোর জন্য সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

এ সম্পর্কে ফ্রান্সের মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের কাছে থাকা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেছে, ফরাসি পুলিশ অলিম্পিক গেমস শুরু হওয়ার এক বছর আগে থেকে ১৩ হাজার অভিবাসী ও শরণার্থীকে প্যারিস থেকে অন্যত্র পাঠানোর কাজ শুরু করে।

এসব মানবাধিকার গোষ্ঠীর মতে, রাজধানী প্যারিসের বাহ্যিক দরিদ্র ও অসহায় অবস্থা যাতে বিদেশি ক্রীড়াবিদ ও পর্যটকদের চোখে না পড়ে সেজন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছে ম্যাকরন সরকার।

ফরাসি মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, অলিম্পিক গেমস শুরুর একই সময়ে অভিবাসীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার এই গেমসের আইনে বর্ণিত মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি করেছে; কারণ ওই আইনে ‘মানবীয় মর্যাদা, বন্ধুত্ব এবং সমতা’র কথা বলা হয়েছে।

আল-আরাবি নিউজ চ্যানেলের রিপোর্টার প্যারিস অলিম্পিক শুরু হওয়ার আগে এই নগরীর পরিস্থিতি এভাবে বর্ণনা করেন: “প্যারিসের রাস্তাঘাট এখন ঝকঝকে-তকতকে পরিস্কার এবং রাস্তার দুপাশে ও স্কয়ারগুলিতে অলিম্পিক গেমসের বিভিন্ন ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও বিলবোর্ডে ঠাসা। কিন্তু এই রোমান্টিক সব ছবি ও রঙবেরঙের দৃশ্যাবলীর পেছনে একটি দুঃখজনক অমানবিক বাস্তবতার কালো অধ্যায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে।  ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো হাজার হাজার শরণার্থী ও অভিবাসীকে দৃশ্যপট থেকে বিদায় করে দিয়েছে।”

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস-এর সমন্বয়ক ম্যাথিউ ডিউ এ সম্পর্কে বলেছেন: “আজ আমার কর্মস্থলে পৌঁছার জন্য আমাকে কয়েকটি রেল ও মেট্রো স্টেশন পার হতে হয়েছে এবং সবগুলো স্থানে আমি নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিপুল সংখ্যক সদস্যকে মোতায়েন থাকতে দেখেছি। এই পরিস্থিতি দেখে তাদের ব্যাপারে আমার উদ্বেগ চরমে পৌঁছেছে যাদেরকে আমরা চিকিৎসা সেবা দেই। কারণ, এসব মানুষের বেশিরভাগেরই প্যারিসে থাকার মতো রেসিডেন্স পারমিট নেই।”

এর আগে ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে প্যারিসের চরম নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছিল: “জার্মানির হাতে প্যারিসের পতনের সময়কালের পর ফ্রান্সের রাজধানী শহরে এত বেশি পুলিশ ও সেনা সদস্য আর কখনওই মোতায়েন করা হয়নি।”#

পার্সটুডে/এমএমআই/২৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ