পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতি ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা: সিপিডি
শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা বর্ষণে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের শেরপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। বন্যায় সাত জনের মৃত্যুর কথা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আজ (রোববার) দুপুর পর্যন্ত শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার অন্তত আরও ছয়টি ইউনিয়নের অনেকগুলো গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। উজানের ঢল ভাটির দিকে নামতে শুরু করায় ছোটবড় বিভিন্ন বাঁধ ও সড়কে ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। শেরপুর থেকে তিনআনী হয়ে নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগাঁও সেতুর কাছে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় শনিবার দুপুর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
এ ছাড়া শেরপুর থেকে গাজীর খামার হয়ে নালিতাবাড়ীগামী রাস্তার কলসপাড় ইউনিয়নের চারটি জায়গার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন ও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৩০টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ায় গতকাল শনিবার থেকে সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, শনিবার রাতে এই উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নালিতাবাড়ীতে পাঁচজন ও ঝিনাইগাতীতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার জানিয়েছেন, শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি টাকার বেশি। পুরো জেলার সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় আনুমানিক ১৪ হাজার ৪২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা প্রায় এক দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
আজ (রোববার) রাজধানীর সিপিডি কার্যালয়ে 'পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া: সিপিডির বিশ্লেষণ' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই ক্ষতির পরিমাণ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের এক দশমিক ৮১ শতাংশ।
জিডিপির নিরিখে, এটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের খসড়া জিডিপির শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অনুমিত জিডিপির শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ।
২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই বন্যা ক্রমাগত ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পানির প্রবাহে হয়েছিল। বন্যায় দেশের পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সিপিডি এ তথ্য জানিয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৬