সরকার ছাড়লেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
'গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করতে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে'
-
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মো. নাহিদ ইসলাম
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মো. নাহিদ ইসলাম।
পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর যমুনার সামনে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, আজ বেলা একটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। বৈঠকে তিনি তাঁর একটি ব্যক্তিগত বিষয় আলোচনা করেছেন এবং আলোচনা সাপেক্ষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। এ ছাড়া জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনসহ সরকারের যেসব কমিটিতে তিনি ছিলেন, সেসব কমিটি থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার জন্য এবং গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার শক্তিকে সংহত করতে, সরকারে থাকার চেয়ে রাজপথে তাঁর ভূমিকা বেশি হবে। সে জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক দলেও তিনি অংশ নিতে আগ্রহের কথা জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, সেই পরিস্থিতিতে একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের জন্য আমার রাজপথে থাকা প্রয়োজন, ছাত্র-জনতার কাতারে থাকা প্রয়োজন। আমরা যে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা করি, সেই আকাঙ্ক্ষার জন্য এবং গণ-অভ্যুত্থানে যে ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণ করেছে, সেই শক্তিকে সংহত করতে, আমি মনে করেছি যে সরকারে থাকার চেয়ে সরকারের বাইরে থেকে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে এবং বাইরে যে সহযোদ্ধারা রয়েছেন, তাঁরাও এটি চান। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’
গত সাড়ে ছয় মাসে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, দুটি মন্ত্রণালয়ের বাইরেও অনেক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোতে কিছু কাজ করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই কাজের ফলাফল হয়তো সামনে জনগণ পাবে। ছয় মাস খুবই কম সময়, তারপরও তিনি চেষ্টা করেছেন। তাঁর কাজ, ফলাফল জনগণ মূল্যায়ন করবে। আজকে থেকে তিনি সরকারের কোনো দায়িত্বে নেই।
আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মানিকমিয়া অ্যাভিনিউয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। নতুন এ দলের নাম না জানা গেলেও এর নেতৃত্বে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব হবেন আকতার হোসেন থাকবেন বলে জানা গেছে। সে কারণে নাহিদ উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল।
নতুন রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠক পদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম থাকার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষ পদগুলোতে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ থাকবেন বলে জানা গেছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৫