ইউনিফিল মিশনের শেষ? মার্কিন-ইউরোপীয় দ্বন্দ্বে শান্তিরক্ষী বাহিনীর মেয়াদ নবায়ন
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i151222
পার্সটুডে: লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী 'ইউনিফিল'-এর কার্যক্রমের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় যতই ঘটিয়ে আসছে, হোয়াইট হাউস নতুন করে এই বাহিনীর মেয়াদ বাড়ানো ঠেকাতে তৎপর হয়েছে। বিষয়টি হোয়াইট হাউস ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য নেতিবাচক পরিণতি বয়ে এনেছে। 
(last modified 2025-08-18T12:31:56+00:00 )
আগস্ট ১৭, ২০২৫ ১৮:৫২ Asia/Dhaka
  • লেবানের মোতায়েন ইউনিফিল বাহিনীর কয়েকজন সদস্য
    লেবানের মোতায়েন ইউনিফিল বাহিনীর কয়েকজন সদস্য

পার্সটুডে: লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী 'ইউনিফিল'-এর কার্যক্রমের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় যতই ঘটিয়ে আসছে, হোয়াইট হাউস নতুন করে এই বাহিনীর মেয়াদ বাড়ানো ঠেকাতে তৎপর হয়েছে। বিষয়টি হোয়াইট হাউস ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য নেতিবাচক পরিণতি বয়ে এনেছে। 

ইউনিফিল বাহিনীর মিশন চলতি আগস্ট মাসে শেষ হতে যাচ্ছে। এই বহুজাতিক বাহিনী দশক ধরে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, বিশেষ করে গত বছর ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধের সময়। 

ইউনিফিল বাহিনী প্রথমে ১৯৭৮ সালে ইসরায়েলি হামলার পর লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে এই বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি তদারকির জন্য সেখানে মোতায়েন হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ৩৩ দিনের যুদ্ধের পর থেকে এর মিশন আরও বিস্তৃত হয়।

অনেক মার্কিন আইনপ্রণেতা, যাদের মধ্যে কিছু বর্তমানে 'ডোনাল্ড ট্রাম্প' প্রশাসনে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে রয়েছেন, তারা এই বাহিনীর উপস্থিতির সমালোচনা করেছেন। এই বাহিনীর কার্যক্রমকে অর্থের অপচয় বলেও মনে করেন তারা। এখন এমন মতামতের প্রেক্ষাপটে বহু প্রমাণ ও প্রতিবেদন রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে, হোয়াইট হাউস ইউনিফিল বাহিনীর কার্যক্রম পুনরায় বাড়ানো বন্ধ করার চেষ্টা করছে; এ পদক্ষেপ ওয়াশিংটনের প্রধান ইউরোপীয় মিত্র ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ইতালির সঙ্গে সম্পর্কের নতুন সংকটে পরিণত হয়েছে।

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের একজন ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একটি পরিকল্পনায় সই করেছেন, যার মাধ্যমে ইউনিফিলের কার্যক্রম আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  এই পদক্ষেপ এমন সময়ে নেওয়া হলো যখন এর আগেই ওয়াশিংটন ইউনিফিলের বাজেট ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়েছিল।

তেল আবিবও বহু বছর ধরে ইউনিফিলের মিশন শেষ করার চেষ্টা করে আসছে। এই বাহিনীর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তগুলোও প্রায়ই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দীর্ঘ বিতর্ক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর গৃহীত হয়েছে।

ইউরোপীয় দেশগুলো, বিশেষ করে ইতালি ও ফ্রান্স, বারবার এই বাহিনী কমানো ও প্রত্যাহারের বিরোধিতা করেছে এবং ইউনিফিলের উপস্থিতি পুনরায় বাড়ানোর জন্য তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ওয়াশিংটনের কিছু অবহিত সূত্র একই প্রসঙ্গে জানিয়েছে যে, এই ছয় মাসের সময়সীমাও প্যারিস ও রোমের প্রচেষ্টায় বাড়ানো হয়েছে এবং ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। 

বর্তমানে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১০,০০০ শান্তিরক্ষী সৈন্য মোতায়েন রয়েছে, অন্যদিকে লেবাননের সেনাবাহিনীতে প্রায় ৬,০০০ সৈন্য রয়েছে এবং এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০,০০০ করা হবে বলে পরিকল্পনা রয়েছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৭