ইয়েমেনের হুদায়দাহ বন্দরে আমেরিকা-ইসরাইলের বিমান হামলা, ইরান ও হামাসের নিন্দা
(last modified Tue, 06 May 2025 04:50:18 GMT )
মে ০৬, ২০২৫ ১০:৫০ Asia/Dhaka
  • ইয়েমেনের হুদায়দাহ বন্দরে আমেরিকা-ইসরাইলের বিমান হামলা
    ইয়েমেনের হুদায়দাহ বন্দরে আমেরিকা-ইসরাইলের বিমান হামলা

বিদেশি আগ্রাসন ও গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতার জবাবে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী তাদের অপারেশন বৃদ্ধি করায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো ইয়েমেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। গতকাল (সোমবার) রাতে হুদায়দাহ বন্দর শহর লক্ষ্য করে ৩০টিরও বেশি হামলা চালায় ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। 

এক মার্কিন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, এই বিমান হামলাগুলো ইসরাইলের প্রধান মিত্র ও গাজায় চলমান নৃশংস অভিযানের সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে করা হচ্ছে। 

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা সাবা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় দু্ইজন নিহত ও ৪২ জন আহত হয়েছেন।

বন্দরের এক কর্মী জানিয়েছেন, দু’টি জাহাজ থেকে মাল নামানোর সময় হামলার ঘটনাটি ঘটে, এতে বন্দরটিতে যানবাহন চলাচল একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। 

ইয়েমেনের আল-মাসিরা টেলিভিশন জানিয়েছে, ৪ মে থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আল-জাওফ ও মারিবসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন প্রদেশ লক্ষ্য করে ৩৫টি হামলা চালিয়েছে। মার্চ মাস থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরাইল ইয়েমেনে নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং দাবি করছে যে, তারা এই আরব দেশে ১,০০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। 

এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো- লোহিত সাগরে ইসরাইলি ও ইসরাইল-সম্পর্কিত জাহাজে ইয়েমেনি বাহিনীর হামলা বন্ধ করার পাশাপাশি দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের (ইসরাইল) গভীরে তাদের অপারেশন থামানো।

হামলার পর বন্দর সংলগ্ন একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে যায়

ইসরাইল-মার্কিন সাম্প্রতিক এই আগ্রাসন এসেছে ইয়েমেনের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর, যা বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩নং টার্মিনালের কাছে আঘাত হেনেছে। 

ইয়েমেনি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নতুন একটি জবাবি অপারেশন চালিয়েছে। 

ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি রোববার বলেছেন, এই হামলার কারণে ৩০ লাখেরও বেশি ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। 

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের কার্যক্রম এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। 

সারিয়ি বলেছেন, ইয়েমেনি সেনাবাহিনী এই মার্কিন আগ্রাসনের মুখে দৃঢ় ও অটল থাকবে। 

এদিকে, ইয়েমেনে মার্কিন-ইসরাইলি সহিংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে মার্কিন আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইনের নীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।

হামাসসহ ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোও যৌথ বিবৃতিতে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ইয়েমেনের বিভিন্ন বেসামরিক স্থানে দখলদার বিমানবাহিনীর হামলাগুলো আমাদের উভয় জাতির বিরুদ্ধে একটি নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত অপরাধ ছাড়া কিছুই নয়। ইয়েমেনি ভাইদের বিরুদ্ধে এই দখলদার বাহিনীর এই আগ্রাসন প্রমাণ করে যে, ইহুদিবাদীরা ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর বীরদের হাতে কতটা লাঞ্ছনা ও অপমান সহ্য করছে।" 

প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো বলেছে, হুদায়দাহ বন্দরে জায়নবাদীদের বর্বর আগ্রাসন ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর শোচনীয় পরাজয়কে ঠেকাতে করতে পারবে না, যা তারা রোববার ভোগ করেছে, যখন তারা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আটকাতে ব্যর্থ হয়েছিল।  

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাদের পরিকল্পিত ব্যাপক আকাশ অবরোধেরও প্রশংসা করেছে, যা ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনকে ইসরাইল-দখলকৃত অঞ্চলে ফ্লাইট স্থগিত করতে বাধ্য করেছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/৬