শহীদদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি বিশ্ববাসীকে কী বার্তা দিয়েছে?
-
• শহীদদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠান
পার্সটুডে - ইরানে শহীদদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠান ছিল ইরানের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সংহতি এবং দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ, যারা এই অনুষ্ঠানে তাদের ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে জাতীয় ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
শনিবার ২৮ জুন শহীদদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে ইরানের জনগণ তাদের আবেগঘন উপস্থিতির মাধ্যমে আরেকটি মহাকাব্য তৈরি করেছেন, যা বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হয়।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলোও ইসরাইলের হামলায় শহীদদের শেষ বিদায় অনুষ্ঠানে ইরানিদের বিশাল উপস্থিতির খবর প্রকাশ করে লিখেছে: "এতো বিশাল জনতা" ইসরাইলি হামলায় শহীদ হওয়া সামরিক কমান্ডার, বিজ্ঞানী এবং বেসামরিক নাগরিকদের সম্মান জানাতে রাস্তায় নেমে এসেছে।
সিএনএন জানিয়েছে: ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধে শহীদদের সম্মান জানাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ তেহরানে জড়ো হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই কালো পোশাক পরেছিলেন, তারা ইসরাইল-মার্কিন বিরোধী স্লোগান দিয়ে তাদের অপরাধযজ্ঞের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই বিশাল উপস্থিতির মাধ্যমে ইরানি জনগণ আবারও ইসরাইল এবং তার সমর্থকদের কাছে ইরানিদের জাতীয় ঐক্য প্রদর্শন করেছে এবং প্রমাণ করেছে যে রাতের অন্ধকারে কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধ রক্ষার জন্য তাদের ইচ্ছাশক্তিকে দুর্বল করবে না।
১৩ জুন, শুক্রবার সকালে রাজধানী তেহরানসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সামরিক আক্রমণের পর, একদল সাহসী সামরিক কমান্ডার, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং নিরীহ নাগরিক শহীদ হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা টেলিভিশন বার্তায় জোর দিয়ে বলেন: সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইলের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলবে। আল্লাহর ইচ্ছায়, তাদের জীবন তিক্ত হয়ে উঠবে এবং তারা শান্তিতে থাকরতে পারবেনা।
এই দৃঢ় অবস্থানে থেকে, ইরান "ট্রু প্রমিজ-থ্রি" অপারেশনের মাধ্যমে ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলের দিকে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, দেখিয়ে দেয় যে তারা যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেবে।
শহীদদের শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে জনগণের বিশাল উপস্থিতি জাতীয় ঐক্য, বিপ্লবের আদর্শের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের নিরাপত্তার প্রতি তাদের অকুণ্ঠসমর্থনের প্রতীক ছিল। জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ শত্রুদের কাছে এ বার্তা পৌঁছেছে দিয়েছে যে, "ইরানী জাতি যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থাকে রক্ষা করবে।"
জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি আরও প্রমাণ করে যে, শত্রুভাবাপন্ন গণমাধ্যমের প্রচারণার বিপরীতে, ইরানের সরকার ও জনগণের মধ্যে বন্ধন দিন দিন আরও দৃঢ় হচ্ছে। যখনই ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং বিপ্লবের মূল্যবোধ ঝুঁকির মুখে পড়বে, তখনই ইরানিরা আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে তাদের সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়ায়।
শত্রুরা সর্বদা মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভাজন এবং হতাশা তৈরি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই বিশাল পদযাত্রা তাদের মিথ্যাচারকে উন্মোচিত করেছে এবং দেখিয়েছে যে ইরানি জাতি শত্রুর নরম যুদ্ধের বিরুদ্ধে পূর্ণ সতর্কতার সাথে রুখে দাঁড়িয়ে আছে।
বাস্তবতা হল ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধ এবং শহীদদের উচ্চ মর্যাদা জনগণের হৃদয়ে জীবিত। এই আবেগপূর্ণ উপস্থিতি শহীদদের পথ অব্যাহত রাখতে এবং যেকোনো হুমকি মোকাবেলা করতে জাতীয় দৃঢ় সংকল্পকে আরো শক্তিশালী করবে। #
পার্সটুডে/এমআরএইচ/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।