ভারতের ধর্মসংসদে মুসলিমদের গণহত্যার ডাক: প্রধান বিচারপতিকে ৭৬ আইনজীবীর চিঠি
https://parstoday.ir/bn/news/india-i101766-ভারতের_ধর্মসংসদে_মুসলিমদের_গণহত্যার_ডাক_প্রধান_বিচারপতিকে_৭৬_আইনজীবীর_চিঠি
ভারতের হরিদ্বার ও দিল্লির ধর্মসংসদে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও মুসলিমদের গণহত্যা করার আহ্বানের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের ৭৬ জন আইনজীবী ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনাকে চিঠি লিখেছেন।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
ডিসেম্বর ২৭, ২০২১ ১৮:৫৭ Asia/Dhaka
  • ভারতের ধর্মসংসদে মুসলিমদের গণহত্যার ডাক: প্রধান বিচারপতিকে ৭৬ আইনজীবীর চিঠি

ভারতের হরিদ্বার ও দিল্লির ধর্মসংসদে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও মুসলিমদের গণহত্যা করার আহ্বানের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের ৭৬ জন আইনজীবী ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনাকে চিঠি লিখেছেন।

ওই আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতিকে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের বিষয়টি আমলে নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। হিন্দি গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে ওই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।   

১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে দিল্লি ও হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত সাধুদের সমাবেশে দেশের সাংবিধানিক মূল্যবোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হয়। এমনকী সংখ্যালঘু মুসলিমদের টার্গেট করে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু হরিদ্বার ধর্ম সংসদের সংগঠকরা এবং যারা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তারা বলছেন যে তারা কোনো ভুল করেননি।  

গণমাধ্যমে প্রকাশ- দিল্লি এবং হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত এ ধরণের ধর্ম সংসদে জাতিগত গণহত্যারও আহ্বান জানানো হয়েছিল। প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে সিনিয়র আইনজীবীরা বলেছেন, পুলিশি পদক্ষেপ না হওয়ায় দ্রুত বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়ে, এমতাবস্থায় এ ধরণের পদক্ষেপ বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

ওই চিঠিতে দুষ্যন্ত দাভে, প্রশান্ত ভূষণ, বৃন্দা গ্রোভার, সালমান খুরশিদ এবং পাটনা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশের মতো বিশিষ্ট আইনজীবীদের নামও রয়েছে। ওই আইনজীবীদের আবেদন,  দিল্লিতে ‘হিন্দু যুব বাহিনী’র সভায় ঘৃণা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং হরিদ্বারে ধর্ম সংসদের নাম করে ‘গণহত্যা’র ডাক ও বিদ্বেষ ছড়ানোর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করা হোক।

তাঁদের বক্তব্য- দিল্লি এবং হরিদ্বারের সভায় নিছক বিদ্বেষ ছড়ানো হয়নি, প্রকাশ্যেই এ দেশের মুসলিমদের গণহত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের বিদ্বেষ-বক্তব্য শুধু জাতীয় ঐক্য ও সংহতির পক্ষে বিপজ্জনক নয়, তা এ দেশের লাখ লাখ মুসলিমের জীবনও বিপন্ন করে তোলে।

গণমাধ্যমে প্রকাশ- সম্প্রতি হরিদ্বারের ধর্মসংসদ থেকে মুসলিম গণহত্যার ডাক দিয়েছিলেন সাধু ও সাধ্বীরা৷ সাধ্বী অন্নপূর্ণা বলেছিলেন, ‘ওদের ধ্বংস করতে চাইলে মেরে ফেলতে হবে৷ আমাদের ১০০ লোক দরকার যারা ওদের ২০ লাখ মানুষকে হত্যা  করতে পারবে৷’ 

ওই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। কিন্তু উদ্যোক্তাদের দাবি, তাঁরা ভুল কিছু বলেননি৷ হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি বলেন,  তিনি যা বলেছেন তার জন্য লজ্জিত নন। সেজন্য মন্তব্য প্রত্যাহারের প্রশ্ন ওঠে না। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে প্রবোধানন্দ গিরির বক্তব্য- মিয়ানমারের মতো পুলিশ, রাজনীতিবিদ, সেনা এবং প্রত্যেক হিন্দুর কাছে অস্ত্র থাকা দরকার৷ তারপর শুরু হোক নির্মূল অভিযান৷ এ ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা নেই৷     

অবশেষে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদের চারদিন পরে পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। সেখানে কেবল নাম রয়েছে একজনের। পরে ধর্ম দাস এবং সাধ্বী অন্নপূর্ণার নাম যুক্ত করা হয়। কিন্তু ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ কাউকেই এ পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/ আবুসাঈদ/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।