চণ্ডীগড়কে নিয়ে বড় পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের
‘পাঞ্জাবের রাজধানী ছিনতাইয়ের চেষ্টা’, তীব্র প্রতিবাদ আপ-কংগ্রেসের
-
চণ্ডিগড় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বড় পরিকল্পনা!
চণ্ডীগড়কে ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের যু্গ্ম রাজধানী করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ১ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মোদি সরকার চণ্ডীগড়ে বড়সড় এই প্রশাসনিক পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।
এনডিটিভির খবরে লেখা হয়েছে, সংবিধানের ১৩১তম সংশোধনী বিলে এ বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করতে যাচ্ছে ক্দ্রেীয় সরকার। তবে এরইমধ্যে আম আদমি পার্টি, কংগ্রেস ও অকালি দল এই বিজেপি সরকারের এই উদ্যোগের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের দাবি, এটা পাঞ্জাববিরোধী পদক্ষেপ।
প্রশ্ন উঠছে কেন এই বিতর্ক? আসলে এই বিলের উদ্দেশ্য চণ্ডীগড়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অন্তর্ভুক্ত করা। ফলে দাদরা ও নগর হাভেলি, লাক্ষাদ্বীপ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, দমন ও দিউ এবং পুদুচেরির মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সমতুল প্রশাসন কার্যকর হবে চণ্ডীগড়ে। ফলে প্রেসিডেন্ট চণ্ডীগড়ের জন্য নিয়মকানুন তৈরির ক্ষমতা পাবেন। বর্তমানে রাজ্যপালই চণ্ডীগড়ের শাসক। উল্লেখ্য, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার যুগ্ম রাজধানী চণ্ডীগড়।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এ বলা আছে রাষ্ট্রপতি শান্তি, অগ্রগতি এবং সুশাসনের জন্য বিধিমালা তৈরি করতে পারবেন (ক) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, (খ) লাক্ষাদ্বীপ, (গ) দাদরা ও নগর হাভেলি, (ঘ) দমন ও দিউ এবং (ঙ) পুদুচেরির কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে চণ্ডীগড়ও।
১৯৬৬ সালের ১ নভেম্বর জন্ম হয়েছিল হরিয়ানা রাজ্যের। পাঞ্জাবের হিন্দিভাষী-বহুল পূর্বাঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় সেটি। অন্যদিকে পাঞ্জাব থেকে যায় পশ্চিমাঞ্চলের পাঞ্জাবিদের নিয়ে। চণ্ডীগড় যেন দুই রাজ্যেরই প্রশাসনিক কেন্দ্র তথা রাজধানী হিসেবে থাকতে পারে, সেদিকে তাকিয়েই একে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই মুহূর্তে পাঞ্জাবের রাজ্যপালই চণ্ডীগড়ের প্রশাসক। পাঞ্জাবের রাজনীতিবিদরা বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছেন চণ্ডীগড়কে পাঞ্জাবের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। হরিয়ানাকে দেওয়া হোক আলাদা রাজধানী। এই অবস্থায় এবার কেন্দ্রের উদ্যোগের কথা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ রাজনৈতিকমহল।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত মান এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'চণ্ডীগড় তৈরির জন্য আমাদের গ্রামগুলি ধ্বংস করা হয়েছিল। এর ওপর কেবল পাঞ্জাবেরই অধিকার রয়েছে। আমরা হাল ছাড়ব না এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।'
অন্যদিকে আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, 'ইতিহাস সাক্ষী, পাঞ্জাবিরা কখনও স্বৈরশাসনের কাছে মাথা নত করেনি। এবারও তা করবে না। চণ্ডীগড় পাঞ্জাবের ছিল, আছে এবং থাকবে। পাঞ্জাব সর্বদা দেশের নিরাপত্তা, শস্য এবং জলের জন্য আত্মত্যাগ করেছে। অথচ তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।' এদিকে পাঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজাও প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। তাঁর কথায়, 'চণ্ডীগড় পাঞ্জাবের। এটি ছিনিয়ে নেওয়ার যে কোনও প্রচেষ্টার গুরুতর পরিণতি হবে।'#
পার্সটুডে/জিএআর/২৩