সি এ এ:
‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন' কার্যকর না হওয়ায় বিজেপি'তে অসন্তোষ বৃদ্ধি
ভারতে বহুলালোচিত ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ (সিএএ/ক্যা) কার্যকর না হওয়ায় বিজেপি’র মতুয়া এমপি-বিধায়কদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ইস্যুতে মতুয়াদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিজেপির মতুয়া এমপি-বিধায়কদের মধ্যে অস্বস্তি প্রকাশ পাচ্ছে।
ওই ইস্যুতে আজ (রোববার) ঠাকুরনগরে এক বৈঠক শেষে মতুয়া নেতা ও বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর বলেন, ‘২০০৩ সাল থেকে নাগরিকত্ব ইস্যুতে আন্দোলন চলছে। এ নিয়ে অনেকবার অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। রেল অবরোধ হয়েছে অনেকবার। এ সবের পরে ২০১৯ সালে আমরা দেখলাম সংসদে ‘সিএএ’ পাশ হয়ে তা আইনে পরিণত হল। কিন্তু দীর্ঘদিন টালবাহানার পরেও তা কার্যকর হল না। এই লাখ লাখ উদ্বাস্তু মানুষ যারা আছেন, তাদের একটা ‘চাপ’ আমাদের উপরে আছে। যেহেতু ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’ নাগরিকত্ব ইস্যুতে আন্দোলন করেছে এবং করবে এবং উদ্বাস্তু, পিছিয়ে পড়া নিপীড়িত মানুষদের সঙ্গে আছে। আমাদের ওই দায়িত্ব সবসময় কাঁধে ছিল। আমার ঠাকুরদা পি আর ঠাকুর দেশভাগের পর থেকে উদ্বাস্তু মানুষদের জন্য আন্দোলন করেছেন। তারপরে এখন আমরা করছি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে সাংগঠনিক বৈঠক ছিল, ওই বৈঠকে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ৯ জানুয়ারি ‘সিএএ’ কার্যকর শেষ তারিখ ছিল। এটা আমাদের শুধু দাবি নয়। এটা মানুষের আর্তনাদ, মানুষের চাহিদা। আমরা অবশ্যই মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার জন্য আলোচনা করব। ‘সিএএ’ কত তাড়াতাড়ি কার্যকর করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের পদাধিকারিদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে বিষয়টি জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওই ইস্যুতে আমাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। মানুষ দিকভ্রান্ত এবং তাদের কাছে ভুল তথ্য যাচ্ছে সেটাই নয়, এদের মধ্যে প্যানিক শুরু হয়েছে গোটা ভারতজুড়ে উদ্বাস্তু মানুষজনের মধ্যে। উত্তর প্রদেশ, উড়িষ্যার মালকানগিরি, রাজস্থান, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফোন আসছে, তারা বলছেন আমরা কী করব?’
অন্যদিকে, আজ মতুয়া বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বলেন, ‘৯ জানুয়ারির মাধ্যে ‘সিএএ’র বিধি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, সেটা না হওয়ায় বিভিন্ন রাজ্য থেকে শান্তনু ঠাকুরের (বিজেপি এমপি) কাছে ফোন এসেছিল। আমরা যারা মতুয়া প্রতিনিধি হয়েছি তাদের প্রত্যেকের কাছে বিভিন্ন দাবিদাওয়া ছিল সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
২০১৯ সালে ‘সিএএ’ সংসদে পাস হওয়ার পর এতদিনেও তা কার্যকর করা হয়নি, কারণ, এর বিধিমালা সম্পর্কে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বলেছিলেন, সারা দেশে কোভিড টিকা দেওয়া শেষ হওয়ার পরে, ‘সিএএ’ কার্যকর করা হবে। এসবের মধ্যেই মতুয়া বিধায়ক ও এমপিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এনএম/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।