সরকার নাগরিকদের বেনাগরিক করে দিয়ে নাগরিকত্বের কথা বলছে
https://parstoday.ir/bn/news/india-i115626-সরকার_নাগরিকদের_বেনাগরিক_করে_দিয়ে_নাগরিকত্বের_কথা_বলছে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকদের বেনাগরিক করে দিয়ে নাগরিকত্বের কথা বলছে, এটা আসলে উদ্বাস্তু মানুষদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা।’
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
নভেম্বর ০৮, ২০২২ ২১:০৮ Asia/Dhaka
  • সরকার নাগরিকদের বেনাগরিক করে দিয়ে নাগরিকত্বের কথা বলছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকদের বেনাগরিক করে দিয়ে নাগরিকত্বের কথা বলছে, এটা আসলে উদ্বাস্তু মানুষদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা।’

 কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী আজ (মঙ্গলবার) ওই মন্তব্য করেন।     

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে গুরুনানকের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়ে বলেছেন, ‘দেশভাগের ফলে নির্যাতনের শিকার হিন্দু ও শিখরা। তাই তাদের পাশে দাঁড়াতেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’ তৈরি করা হয়েছে। দেশ বিভাজনের সময়ে যারা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করতে বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস চালু করেছে সরকার। বিভাজনের শিকার হিন্দু ও শিখদের জন্য আমরা ‘সিএএ’ তৈরি করেছি। যারা ভারতের বাইরে রয়ে  গেছেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সম্প্রতি আপনারা দেখেছেন গুজরাটে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকদের নাগরিকত্ব দিয়ে ভারত প্রমাণ করেছে দুনিয়ার যেখানেই থাকি ভারত আমাদের ঘর।’ এ প্রসঙ্গে আজ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘৭৫ বছর আগে দেশভাগ হয়েছিল। হিন্দু ও শিখরা না হয় বিপদে পড়ল এতে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চয়ই তারা বিপদে পড়েছে অনেকাংশে। তার মধ্যে পাঞ্জাবে যেভাবে উদ্বাস্তু সমস্যাকে মোকাবিলা করেছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার, সেটা বাংলায় করেনি। ক্কিন্তু ৭৫ বছর ধরে যারা আছে, ২০/২৫/৫০ বছর ধরে যারা এখানে আছে, তারা এখনও নাগরিক না, এদের তাহলে বেনাগরিক করে রাখল কে? তারা তো ভোট দেয়।  সংবিধানের নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী নাগরিকরাই কেবলমাত্র ভোট দিতে পারে। তারা ভোট দেয়, ভোটে দাঁড়ায়, ভোটে জেতে, মন্ত্রী হয়। তারা তো নাগরিক। বরং, কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী নাগরিকদের বেনাগরিক করে দিয়ে তারপর নাগরিকত্বের কথা বলছেন, এটা আসলে উদ্বাস্তু মানুষদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা।’

অন্যদিকে, ওই ইস্যুতে আজ পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'দেশভাগের ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস এই বিজেপি ও তাদের প্রধানমন্ত্রীর থেকে শিখব না।'  তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা এসেছেন তারা কী এখানকার নাগরিক নন? ভোটার নন? তাদের ভোটেই তো ২০১৯ সালে এই নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, সেই ভোটার তালিকায় তো তারা ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষদের নাগরিক অধিকারের সমস্ত প্রকার ব্যবস্থা এখনকার আইনে আছে তাহলে ‘সিএএ’ শব্দকে এনে ভেদাভেদের রাজনীতির কী দরকার আছে?’  ২০১৯ সালের ‘সিএএ’ আইনে মুসলিমদের বাদ দিয়ে ৬টি ‘অমুসলিম’সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই আইনে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।   

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকার ‘সিএএ’র বিরোধিতা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আইন রাজ্য কার্যকর করতে দেবেন না বলেও জানিয়েছেন।#

 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।