নওসাদ সিদ্দিকির মুক্তির দাবিতে কোলকাতায় মহামিছিল
https://parstoday.ir/bn/news/india-i118898-নওসাদ_সিদ্দিকির_মুক্তির_দাবিতে_কোলকাতায়_মহামিছিল
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘আইএসএফ’ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিসহ অন্যদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে কোলকাতায় নাগরিকপঞ্জি বিরোধী যুক্তমঞ্চের পক্ষ থেকে মিছিল করা হয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জানুয়ারি ২৫, ২০২৩ ১৮:৩০ Asia/Dhaka
  • নওসাদ সিদ্দিকির মুক্তির দাবিতে কোলকাতায় মহামিছিল

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘আইএসএফ’ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিসহ অন্যদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে কোলকাতায় নাগরিকপঞ্জি বিরোধী যুক্তমঞ্চের পক্ষ থেকে মিছিল করা হয়েছে।

আজ (বুধবার) রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিয়ালদহ রেল স্টেশন সংলগ্ন চত্বরে প্রতিবাদী জনতা জড়ো হন। এতে আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি বামপন্থি মনোভাবাপন্ন ও সাধারণ নাগরিক শামিল হন। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক ব্যানার ছাড়াই আজকের প্রতিবাদ মিছিলে সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।  মূলত দুই দফা দাবিতে আজ তাদের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হল- বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিসহ গ্রেফতার হওয়া সকল আইএসএফ কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে এবং ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত সমাজবিরোধীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।   

নাগরিকপঞ্জি বিরোধী যুক্তমঞ্চের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বসু এক বিবৃতিতে বলেন, এই মিছিলের উদ্যোক্তা কোনও রাজনৈতিক দল নয়। পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্ত  গণতন্ত্র রক্ষার্থে দলমত নির্বিশেষে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করার জন্য নাগরিকপঞ্জি বিরোধী যুক্তমঞ্চের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  

অন্যদিকে, আজ কোলকাতায় বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার পক্ষ থেকে ওই ইস্যুতে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। মুরলিধর সেন লেন থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কলেজ স্ট্রিটে যায়। সেখানে তারা সড়ক অবরোধ করে। এসময়ে পুলিশের সঙ্গে তারা বচসায় জড়িয়ে পড়েন।     

এদিকে, সিপিএমের সিনিয়র নেতা ও সাবেক বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কার্যত অপরাধী সরকার চলছে।’ সম্প্রতি গ্রেফতার হয়ে কোলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে পুলিশ হেফাজতে থাকা ‘আইএসএফ’ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে না পেরে গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে তিনি ওই মন্তব্য করেন।

সুজন চক্রবর্তী

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে থাকা তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, অনুব্রত মণ্ডলের জামাই আদর, আর এ ক্ষেত্রে বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে, কেন? আমরা অনুরোধ করেছিলাম যে আমরা তার সঙ্গে দেখা করব, কিন্তু পুলিশ তা করতে দেয়নি। অনুব্রত মণ্ডলের জামাই আদর, আর এক্ষেত্রে উল্টোটা হবে কেন? পশ্চিমবঙ্গে কার্যত সরকার অপরাধী। রাজ্যে অপরাধী সরকার চলছে। দাঁত-নখ সব বার করা চলছে। হিংস্রতা করছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে। এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। এর ফল ফলবে, ওরা যেন অপেক্ষায় থাকে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ যারা ক্ষমতায় আছেন তারা অপরাধী। সরকার যারা চালাচ্ছেন তারা অপরাধী। মানুষের কোনও অধিকার নেই। দিল্লি-রাজ্য (কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার) মিলিয়ে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সেই কারণে এমনকী  বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করতে পর্যন্ত দেয়া হল না। আমি আইনজীবিকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি একা গিয়েছিলাম। অনেক লোকজনকে নিয়ে যাইনি। আমার পরিচয় সবাই জানেন। একজন হাজতে আছে তার সঙ্গে দেখা করা যাবে না! সে কীরকমভাবে আক্রান্ত হয়েছে, অত্যাচারিত হয়েছে, কীরকম দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, এটা জানা যাবে না! এমনকী আইনজীবীও জানতে পারবেন না? ও তো নথিভুক্ত আইনজীবী। কিন্তু দেখা করতে দেয়নি।’

‘পশ্চিমবঙ্গে একটা ঘাস-পাতা নড়ে না মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া। পুলিশ পেটায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। পুলিশ উঠবস করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে’ বলেও মন্তব্য করেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী।   

পশ্চিমবঙ্গের ভাঙড়ে আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের উপরে তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে গত (শনিবার) কোলকাতায় সড়ক অবরোধ করে  আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন। তাদের দাবি ছিল ভাঙড়ের হামলায় জড়িত তৃণমূলের লোকজনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ওইদিনই আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস হওয়ায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী কোলকাতায় সভা ছিল আইএসএফের। অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি- ভাঙড়ে আইএসএফ কর্মীরা তাদের দলীয় অফিস ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/২৫