ত্রিপুরায় ভোটে সহিংসতার অভিযোগ
বাম-কংগ্রেস নেতারা সোচ্চার, পশ্চিমবঙ্গে ৯ মার্চ প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক
ভারতের ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সহিংসতার অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস দলের নেতৃবৃন্দ। ওই ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে আগামী ৯ মার্চ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট।
একইসঙ্গে সিপিআইএমের পলিট ব্যুরোর পক্ষ থেকে সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে রাজ্যটিতে বিজেপি পুনরায় জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
ত্রিপুরায় হত্যা-সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে ‘ডিওয়াইএফআই’ উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে গতকাল (সোমবার) বিকেলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এ সময়ে প্রতিবাদী জনতা ‘ত্রিপুরার মানুষের উপর অত্যাচারকারী বিজেপিকে জানাই ধিক ধিক ধিক্কার’, ‘বিজেপি সরকার আর নেই দরকার’, ‘অবিলম্বে ত্রিপুরায় সাধারণ মানুষের উপরে হামলা বন্ধ করতে হবে’, ‘ত্রিপুরার মানুষের উপরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ করো’, ‘ত্রিপুরায় মানুষের উপরে হামলা হচ্ছে কেন, বিজেপি-নরেন্দ্র মোদী জবাব চাই, জবাব দাও’, ‘দাঙ্গাবাজ বিজেপিকে জানাই, ধিক ধিক ধিক্কার’ ইত্যাদি স্লোগানে সোচ্চার হন।
এ প্রসঙ্গে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘ত্রিপুরায় সাধারণ মানুষের উপরে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাদের ঘর পোড়ানো হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে, বাড়িতে ঢুকে তাদের হাত-পা কেটে দেওয়া হচ্ছে! এর বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজেপির ধ্বংসাত্মক মুখ, যারা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের আক্রমণের বিরুদ্ধে কথা বলে, তারা ত্রিপুরাতে সাধারণ মানুষের উপরে আক্রমণ নামিয়ে আনছে। আর যারা ত্রিপুরাতে গিয়ে সেখানে মানুষের গণতন্ত্রের কথা বলে, পশ্চিমবঙ্গে সেই তৃণমূল, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদের উপরে আক্রমণ নামিয়ে আনে। ফলে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কোনও ফারাক নেই’ বলেও মন্তব্য করেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি।
অন্যদিকে, গতকাল (সোমবার) বিকেলে ত্রিপুরায় কৈলাশহর কংগ্রেস ভবনে ত্রিপুরা রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ না হলে রাজ্যজুড়ে বাম-কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে আত্মরক্ষার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। কংগ্রেস ভবনে ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিত সিনহা, জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মুহাম্মাদ বদরুজ্জামান, রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রুদ্রেন্দু ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
সিপিএমের পলিট ব্যুরো বলেছে, ‘রাজ্যজুড়ে ব্যাপক সংখ্যায় হিংস্র আক্রমণে সিপিআই(এম) সমর্থকদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। শারীরিক আক্রমণ হচ্ছে। জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবিকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এক হাজারের ওপর হামলায় এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩ জন। ৬৬৮টি ঘটনার বিশদ বিবরণ প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছে সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্ট প্রতিনিধিদল।’
সিপিএমের পলিট ব্যুরোর পক্ষ থেকে রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের কাছে অবিলম্বে আইন শৃঙ্খলা ফেরাতে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আক্রান্তদের আর্থিক ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে দাবি জানানো হয়েছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৭