পশ্চিমবঙ্গে ফের রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, বন্ধ ইন্টারনেট
(last modified Mon, 03 Apr 2023 08:32:10 GMT )
এপ্রিল ০৩, ২০২৩ ১৪:৩২ Asia/Dhaka
  • পশ্চিমবঙ্গে ফের রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, বন্ধ ইন্টারনেট

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফের রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি হাওড়া জেলার শিবপুর এলাকায় সহিংসতা হয়। সেই ঘটনার জের না মিটতেই এবার হুগলী জেলার রিষড়াতে সহিংস ঘটনা ঘটেছে।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিষড়া এবং মাহেশ এলাকায় রোববার রাত ১০টা থেকে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। গোলযোগের ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

কুণাল ঘোষ

এ প্রসঙ্গে আজ (সোমবার) তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপির বিরুদ্ধে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এমপি বলেন, ‘উনি রামনবমীর কী জানেন? হারামের ধন  খেয় খেয়ে ওদের রাম বলে কোনও জ্ঞান নেই আর! সেজন্য যাদের সঙ্গে আছেন, তারা রামভক্ত কেউ নয়। রামকে নিয়ে সারাব ছরই উৎসব চলে। ভারতবর্ষ রামের জায়গা। আর এখানে চলবে।’

ওই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বসেছে পুলিশ পিকেট। আজ (সোমবার) সকাল থেকে এলাকায় প্রচার চালানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। অকারণে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে জনসাধারণকে। এর পাশাপাশি ১৪৪ ধারা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

গতকাল (রোববার) রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিল সংলগ্ন এলাকায় তাণ্ডব চলে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগের জেরে একের পর এক ঠেলাগাড়ি থেকে স্কুটার, গাড়ি ইত্যাদি পুড়ে যায়। একইসঙ্গে চলে ইট-পাথর নিক্ষেপের ঘটনা। ঘটনার জেরে উভয়পক্ষের একাধিক সমর্থক আহত হওয়ার পাশপাশি পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মীরাও আহত হয়েছেন। শেষপর্যন্ত ‘র‍্যাফ’ নামিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার চেষ্টা করা হয়।

একপক্ষের দাবি, তারা শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। সেখানে হামলা চালানো হয়। মদের বোতল, ইট ছোড়া হয়েছে। অন্যপক্ষের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ঢুকে সেখানকার ভাবাবেগকে আহত করে স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। তারপর হামলা করা হয়।

এদিকে, গোটা ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গত কয়েকদিন ধরেই রোববারের শোভাযাত্রাকে ঘিরে পুলিশ প্রস্তুতি নিয়েছে। রুট পরিদর্শনও করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু তা সত্ত্বেও কীভাবে ওই শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টি হল তা নিয়ে বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন।

জানা গেছে, এদিনের মিছিল রিষড়ার বাঙ্গুর পার্ক থেকে মাহেশ পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। সেভাবেই মিছিল বের হয়। সেখানে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ ও শ্রীরামপুরের বিজেপি সভাপতি মোহন আদকসহ বিজেপির একঝাঁক নেতা-কর্মী ছিলেন। মিছিল ওয়েলিংটন জুটমিল পেরিয়ে যাওয়ার মুখে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। এরপরই রাস্তার ধারের গাড়ি, ঠেলাগাড়ি, গুমটি ইত্যাদিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষসহ একাধিক নেতা আহত হন।

বিজেপির সমালোচনা করে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পরিকল্পিত ভাবে গন্ডগোল করার জন্য প্ররোচনা দিতে বিজেপি এই ঘটনা ঘটায়। এদের প্রত্যেককে ধরে কড়া আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/ ৩

ট্যাগ