অক্টোবর ২৯, ২০২৩ ২০:৩০ Asia/Dhaka
  • কেরালার এর্নাকুলামে বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত ৫২, দিল্লি, মুম্বাই, উত্তর প্রদেশে সতর্কতা  

ভারতের কেরালার এর্নাকুলামের কালামাসেরিতে একটি ধর্মীয় সমাবেশে বিস্ফোরণের ফলে ১ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৫২ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। 

কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, বিস্ফোরণে ৫২ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কালামাসেরিতে ৩০ জন ভর্তি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮ জন আইসিইউতে এবং ৬ জন গুরুতর আহত। আহতেদের মধ্যে ১২ বছরের একটি শিশুও রয়েছে। নিহতের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, আজ (রোববার) কেরালার কালামাসেরিতে জামরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এগজিবিশন সেন্টারে একটি ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী জেহোবা অনুগামী প্রায় ২ হাজার মানুষ ওই প্রার্থনাসভায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময়ে, সকাল সাড়ে ৯টার কিছু পরে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে বলে দাবি।  

এদিকে, আজ দুপুরে ত্রিশূরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন এক ব্যক্তি। ডমিনিক মার্টিন নামের ওই ব্যক্তির দাবি, টিভিন বক্সে ভরে তিনিই বিস্ফোরক রেখেছিলেন ওই কনভেনশন সেন্টারে। তা থেকেই পর পর বিস্ফোরণ ঘটে। কালামাসেরি পুলিশের এডিজিপি (আইন-শৃঙ্খলা) অজিত কুমার বলেন, ত্রিশূর গ্রামীণের কোডাকারা থানায় একজন আত্মসমর্পণ করেছেন। নাম ডমিনিক মার্টিন। প্রার্থনাসভায় যারা ছিলেন, তাদের সংগঠনের সদস্য বলে দাবি করছেন। আমরা যাচাই করে দেখছি। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এই বিষয়ে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, 'খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা সমস্ত তথ্য জোগাড় করছি। সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছেছেন। ডিজিপিকে যেতে বলেছি।' 

এদিকে, ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা সামনে আসতেই উদ্বিগ্ন হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতোমধ্যেই কেরালার মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘এনআইএ’র কর্মকর্তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশ মতো একজন কর্মকর্তাসহ আট সদস্যের এনএসজি কমান্ডোর দল রওনা দিয়েছে এর্নাকুলামের কালামাসেরির উদ্দেশে। 

ওই বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে কেরালা সরকার। সমস্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করে দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভীনা জর্জ। বিস্ফোরণের পিছনে কাদের হাত রয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে কী না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওই ইস্যুতে আগামী কাল (সোমবার) সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কালামাসেরি থানার কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনাস্থলে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটেছে কী না তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কর্মকর্তার মতে, একটি খ্রিস্টান গোষ্ঠীর কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণ ঘটে বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, সকাল ৯টার দিকে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে একটি ফোন আসে এবং পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেছেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে টার্গেট করে এই বিস্ফোরণের কথা শুনে আমি খুবই দুঃখিত। আমি এ জন্য কেরালা সরকারকে দায়ী করছি। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী, যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। তিনি এখন দিল্লিতে বসে রাজনীতি করছেন।’ 

এদিকে, কেরালায় বিস্ফোরণের পর রাজধানী দিল্লি এবং মুম্বাই পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তর প্রদেশেও। মুম্বাই পুলিশ বলছে, উৎসবের মরসুম এবং ক্রিকেট ম্যাচকে সামনে রেখে আমরা ইতোমধ্যেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। মুম্বাই ইহুদি কেন্দ্র চাবাদ হাউসে আগে থেকেই ২৪ ঘন্টা কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। #     

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ