বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা চিরকাল মানুষের মনে গেঁথে থাকবে: ওয়াইসি
ভারতের মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বলেছেন, ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা চিরকাল মানুষের মনে গেঁথে থাকবে।
বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় নির্মিত বহুলালোচিত রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আগে আজ (শনিবার) ওয়াইসির ওই মন্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। আগামী ২২ জানুয়ারি ওই মন্দিরের উদ্বোধন হবে। এ প্রসঙ্গে ওয়াইসি বলেন, কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার লোকসভা নির্বাচনে এটিকে একটি ইস্যু করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আসল সমস্যা হল বেকারত্ব এবং মূল্যস্ফীতির।
মথুরার শাহী ঈদগাহকে কৃষ্ণ মন্দির হিসেবে ঘোষণা করার দাবির তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, ‘উপাসনার স্থান আইন’টি সংসদ তৈরি করেছে। কেন মোদী সরকার বলছে না যে আমরা এর উপর দাঁড়িয়ে আছি?
প্রসঙ্গত, উপাসনা স্থান (বিশেষ বিধান)আইন-১৯৯১ তে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টে থাকা যে কোনও উপাসনালয়ের ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। এই আইনের ধারা ৩ অনুযায়ী, কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনাকেন্দ্র বা স্থানকে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ভিন্নধর্মীয় উপাসনালয়ে রূপান্তরিত করা যাবে না। এমনকি, একই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের একটি ভিন্ন অংশের উপাসনাস্থলেও বদলানো যাবে না।
অযোধ্যায় রাম মন্দির থেকে কিছুটা দূরত্বে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মসজিদ তৈরি হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, এ ধরণের মসজিদকে মসজিদ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। এটা কী করে সম্ভব যে আপনি মসজিদ ভেঙ্গে বলবেন মসজিদ নাও! তিনি বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে নিই, তবে স্বাধীনতার পর যা ঘটেছে তা সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
সংসদে মুসলিম প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়ানোর উপরেও জোর দিয়েছেন ওয়াইসি। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে যখন প্রত্যেক সম্প্রদায় এবং প্রত্যেক বর্ণের প্রতিনিধিত্ব আছে, তাহলে মুসলিমরা ১৪ শতাংশ হলেও তাদের মাত্র ৫ শতাংশ এমপি কেন? মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো উচিত।

অন্যদিকে, বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রসঙ্গে ওয়াইসি বলেছেন, সিএএ, এনআরসি ‘কালো আইন’। এটা ধর্মের ভিত্তিতে গড়ে তোলা হচ্ছে। এটি মুসলিম ও দলিতদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। তেলেঙ্গানা বিধানসভায় এর বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছিল। আমরা ‘সিএএ’ এবং ‘এনআরসি’র বিরুদ্ধে ছিলাম এবং থাকব। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দুদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে এবং তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন ‘মিম’ প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েকশো বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ প্রকাশ্য দিবালোকে বেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ‘করসেবক’ নামধারী উগ্রহিন্দুত্ববাদী জনতা। তাদের দাবি- ওই স্থানটি ভগবান রামের জনস্থান। ওই ইস্যুতে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে আদালতের রায়ে সেখানে তৈরি হয়েছে রাম মন্দির। আগামী ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত দিয়ে এর সূচনা হবে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৬