কৃষক সংগঠনের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক, হরিয়ানার ৭ জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট
(last modified Sun, 11 Feb 2024 11:37:28 GMT )
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪ ১৭:৩৭ Asia/Dhaka
  • কৃষক সংগঠনের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক, হরিয়ানার ৭ জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট

ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের নিশ্চয়তা দেওয়ার আইনসহ বিভিন্ন দাবিতে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কৃষকেরা।

আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০টির বেশি কৃষক সংগঠন এ সংক্রান্ত আন্দোলনে শামিল হবে বলে জানা গেছে। তার আগে, বিজেপিশাসিত হরিয়ানার কর্মকর্তারা আম্বালার কাছে শম্ভুতে পাঞ্জাবের সাথে সীমানা ‘সিল’ করে দিয়েছে। দিল্লির দিকে কৃষকদের মিছিল ঠেকাতে জিন্দ ও ফতেহাবাদ জেলার সীমান্তেও ব্যাপক ব্যবস্থা করা হয়েছে। শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কায় হরিয়ানা সরকার ১১/১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতটি জেলা- আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কাইথাল, জিন্দ, হিসার, ফতেহাবাদ এবং সিরসাতে মোবাইল ইন্টারনেট পরিসেবা এবং একসঙ্গে একাধিক এসএমএস পরিসেবা স্থগিত করেছে। 

জানা গেছে, ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (এমএসপি) নিশ্চয়তা দেওয়ার  আইন, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা এবং তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে চাপ সৃষ্টি করতে ১৩ ফেব্রুয়ারি দিল্লির রাস্তায় আন্দোলনের কর্মসূচি রয়েছে কৃষকদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যাবস্থা  হিসেবে আম্বালার কাছে শম্ভু সীমানায় কাঁটাতার, বালির বস্তা, কংক্রিটের ব্লক বাধসহ অন্যান্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ (রোববার)পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন,  জিন্দে, হরিয়ানা-পাঞ্জাব সীমান্তের কাছে দুটি রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও দুটি রাস্তায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। 

ফতেহাবাদ জেলায় পুলিশ পাঞ্জাব থেকে বিক্ষোভকারীদের দিল্লির দিকে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য রাস্তায় সিমেন্টের বাধা এবং পেরেকের স্ট্রিপও লাগিয়েছে। হরিয়ানা পুলিশ শনিবার একটি ট্র্যাফিক পরামর্শ জারি করেছে এবং যাত্রীদের বিকল্প রুট গ্রহণ করতে বলেছে। আম্বালা-শম্ভু সীমানা, খানৌরি-জিন্দ এবং ডাবওয়ালি সীমান্ত থেকে দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আন্দোলনে নামা কৃষকরা। আম্বালা এবং কাইথাল জেলায় নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশে পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। পুলিশ গ্রামের সরপঞ্চ এবং খাপ পঞ্চায়েতদের সাথেও বৈঠক করছে এবং তাদের মিছিলে অংশ না নিতে বলছে। 

পাঞ্জাব ও হরিয়ানার সীমান্ত ঘিরে রাখা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। কৃষকদের মিছিল রুখতে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড গড়ে তুলেছে পুলিশ। হরিয়ানা-দিল্লি সীমান্তে পুলিসের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে ৫০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। ড্রোনের মাধ্যমে গোটা এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পানিকামানও। এলাকায় কড়া তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে বিএসএফ ও ‘র‍্যাফ’কে।

এসকেএম (অ-রাজনৈতিক) নেতা জগজিৎ সিং ডালেওয়াল কৃষকদের দিল্লির দিকে অগ্রসর হতে বাধা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য হরিয়ানা সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত এবং আলোচনা থেকে কখনই পালাবো না। এদিকে, কৃষকদের জাতীয় রাজধানী দিল্লির দিকে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য হরিয়ানা কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১২ ফেব্রুয়ারি এক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। 

অতীতে কেন্দ্রীয় সরকারের তিন কালো কৃষক আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের একটানা প্রতিবাদের মুখে পিছু হটতে হয় নয়াদিল্লিকে। কৃষি আইন প্রয়োগ করা থেকে কার্যত বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। এবার দেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মুখে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’  ডাকে সরকার কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।  #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।  

ট্যাগ