'২০১৬-র চাকরির প্রায় ১৯০০০ নিয়োগ বৈধ'
এখনই বাতিল নয় ২৬,০০০ চাকরি, বেতন ফেরতের নির্দেশেও সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনে (এসএসসি) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলে হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে আজ (মঙ্গলবার) জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে। মামলার পরবর্তী শুনানি অর্থাৎ ১৬ জুলাই পর্যন্ত কারও চাকরি যাচ্ছে না। একই সঙ্গে আপাতত কাউকে বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে না। এছাড়া, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির বিষয়ে হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের ওপর অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের কয়েকটি ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিলেও শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সাদা খাতা জমা দিয়ে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলবে।
একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, যদি ভবিষ্যতে কেউ অযোগ্য চাকরিপ্রার্থী বলে প্রমাণিত হন, তাহলে তাঁকে বেতন ফেরত দিতে হবে। মুচলেকাও দিতে বলা হয়েছে তাঁদের।
দীর্ঘ শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আরও বলেন, নবম-দশম শ্রেণির এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করলে পঠনপাঠনও ব্যাহত হবে। আপাতত যোগ্য ও অযোগ্য বাছাই করাই মূল বিষয়।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে এসএসসি জানিয়েছে, ২০১৬-র চাকরির প্রায় ১৯০০০ নিয়োগ বৈধ। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে ৭০০০ নিয়োগ অবৈধ, তা শীর্ষ আদালতে বকলমে স্বীকার করে নিল এসএসসি। এখন দেখার, এই ১৯০০০ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের সপক্ষে আদালতে কী প্রমাণ দেয় এসএসসি।
এর আগে বেশ কয়েকবার কলকাতা হাইকোর্ট এসএসসির কাছে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা জানতে চেয়েছে। কিন্তু আলাদাভাবে যোগ্যদের সংখ্যা আদালতে কখনই জানায়নি এসএসসি। এ নিয়ে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভও ছিল। এসএসসি বারবারই অযোগ্যদের তালিকা আদালতে জমা দেয়। কিন্তু আজ, সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিলেন, প্রায় ১৯০০০ নিয়োগ বৈধ।
২২ এপ্রিল, সোমবার ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের এই নজিরবিহীন রায়ের ফলে চাকরি হারান ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। একই সঙ্গে আদালত জানিয়ে দেয়, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। সুদের হার হবে বছরে ১২ শতাংশ। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিহারাদের একাংশ, এসএসসি এবং পর্ষদ।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৭