ভারতের উত্তর প্রদেশে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা: নিহত ১১৬, আহত ২০০
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুরের কাছে একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ১১৬ যাত্রী নিহত ও ২০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। পাটনা থেকে ইন্দোরগামী ট্রেনটি আজ (রোববার) ভোররাত ৩টার দিকে কানপুর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে পুখরাইয়ান শহরের কাছে এ দুর্ঘটনায় পড়ে।
দ্রুতগামী ট্রেনটি গভীর রাতে কীভাবে লাইনচ্যুত হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের এডিজি দলিত সিং চৌধুরি জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত দুর্ঘটনাকবলিত বগিগুলো থেকে ৬৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
কানপুর রেঞ্জের ডিআইজ রাজেশ মোদাক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় পাটনা-ইন্দোর এক্সপ্রেসের দু’টি বগি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই দুই বগির বেশিরভাগ যাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা করেছেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে ব্যক্তিগতভাবে উদ্ধারকাজ তদারকির দায়িত্ব দিয়েছেন। সেইসঙ্গে রাজ্যের রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু পেয়েছেন দুর্ঘটনার কারণ অনুসদ্ধানের দায়িত্ব।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে যাত্রীবাহী বাস পাঠানো হয়েছে বলে উত্তরাঞ্চলীয় রেলের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে আহতদের জন্য প্রার্থনা করেছেন। তিনি রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন।
রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু বলেন, দুর্ঘটনার ওপরে নজর রাখা হয়েছে। ওই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ঘটনাস্থলে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা রাজীব শুক্লা বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বুলেট ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করছে। কিন্তু স্বাভাবিক গতিতে চলা ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।’
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
তৃণমূল নেতা ও সাবেক রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী বলেছেন, ‘রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ই বেলাইন হয়ে পড়েছে। রেলমন্ত্রী বড় বড় দাবি করে থাকেন কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। এখানে সাধারণ যাত্রীরা নিরাপদ নয়।’
বিজেপির সিনিয়র নেতা ও এমপি মুরলি মনোহর যোশি অবশ্য ওই দুর্ঘটনার নেপথ্যে সরকারের বদনাম করার জন্য অন্তর্ঘাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন। তিনি রেল মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে দ্রুত তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন।#
পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/এমএএইচ/এআর/২০