ভাষার টানে সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে মিলেমিশে একাকার দুই বাংলার মানুষ
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে মিলেমিশে একাকার হলেন। সীমান্তের অস্থায়ী রক্তদান শিবির থেকে বিনিময় হল দু’দেশের মানুষের রক্ত।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চ’ থেকে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘ওপার বাংলার অসুস্থ মানুষদের জন্য এপার বাংলার মানুষের দেয়া রক্ত যাবে, একইভাবে ওপার বাংলার মানুষদের রক্ত এপার বাংলার অসুস্থ মানুষদের জন্য আসবে, এর চেয়ে বড় কাজ আর হয় না।’

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মঞ্চের একদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের ছবি দেখিয়ে এদেরকে ‘দুই মা’ বলে অভিহিত করেন। তিনি মঞ্চে ভাষা শহীদদের (অর্থাৎ রফিক, শফিউর, সালাম, বরকত, জব্বারদের) ছবি থাকলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেন। এ সময় বাংলাদেশের বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন তার হাতে একটি আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন যাতে ওই ৫ ভাষা শহীদের ছবি রয়েছে। তিনি ওই আমন্ত্রণ পত্রের ছবি দর্শকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরে নোম্যান্সল্যান্ডে স্থায়ীভাবে ভাষা শহীদদের ছবি রাখা হবে বলে জানান।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বনগাঁর পেট্রাপোল এবং বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্তে আজ কয়েক হাজার মানুষ বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে ভাষা দিবসের শহীদদের স্মরণে সমবেত হন। এই উপলক্ষে নোম্যান্সল্যান্ডে বিশেষভাবে তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাংলাদেশের বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের নেতৃত্বে দুই বাংলার প্রতিনিধিরা।

শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উপস্থিত ছিলেন, বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁর সংসদ সদস্য মমতা ঠাকুর, বনগাঁ (উত্তর) বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক সুরজিত কুমার বিশ্বাস, বাগদার বিধায়ক দুলাল বর, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল প্রমুখ। বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল পৌরসভার মেয়রের পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে দুই বাংলার কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকার, আবৃত্তিকারকরা উপস্থিত ছিলেন। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২১