ভারতের উত্তর প্রদেশে পাসপোর্ট নিয়ে তদন্ত শুরু: মুসলিম নেতারা ক্ষুব্ধ
(last modified Wed, 01 Nov 2017 09:07:11 GMT )
নভেম্বর ০১, ২০১৭ ১৫:০৭ Asia/Dhaka
  • ভারতের উত্তর প্রদেশে পাসপোর্ট নিয়ে তদন্ত শুরু: মুসলিম নেতারা ক্ষুব্ধ

ভারতে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের দেওবন্দ এলাকায় পাসপোর্টধারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ায় মুসলিম নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।   

সম্প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীর হাতে দেওবন্দ এলাকা থেকে ধৃত কয়েকজন বাংলাদেশি সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট ও অন্যান্য নথি পাওয়া গিয়েছিল। সেজন্য পুলিশ ও স্থানীয় গোয়েন্দা দলের পক্ষ থেকে ওই এলাকার সমস্ত পাসপোর্ট খতিতে দেখা হচ্ছে।     

জেলা পুলিশের কর্মকর্তা বাবলু কুমার বলেন, যেহেতু সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীর (এটিএস) হাতে ধৃত সন্ত্রাসীদের কাছ উদ্ধার হওয়া পাসপোর্ট ও অন্য নথিতে দেওবন্দের ঠিকানা ছিল সেজন্য ওই তদন্ত চালানো হচ্ছে। কিন্তু বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত দেওবন্দে প্রশাসনিক ওই তৎপরতা নিয়ে মুসলিম নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন তুলেছেন।  

মাওলানা সাইয়্যেদ আহমেদ বুখারী

দিল্লির ঐতিহাসিক জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইয়্যেদ আহমেদ বুখারী বলেছেন, ‘সাহারানপুরে পুনরায় পাসপোর্ট তদন্তের বিষয়টি বোধগম্য নয়। তদন্তের আদেশ দিয়ে সরকার খোদ নিজের এজেন্সির ওপরই প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। তদন্ত ছাড়া কোনো পাসপোর্ট হয় না। তদন্ত আসলে বাহানা মাত্র। গুজরাটে নির্বাচনের আগে পরিবেশ খারাপ করার চেষ্টা হচ্ছে। সরকার মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছে যা নিন্দনীয়। ওই ঘটনায় মুসলিমরা আতঙ্কে আছেন।’

মাওলানা মুহাম্মদ রফিক কাশেমি

জামায়াতে ইসলামীর সচিব মাওলানা মুহাম্মদ রফিক কাশেমি বলেন, ‘সাহারানপুরে পুনরায় পাসপোর্ট নিয়ে তদন্ত শুরু করা প্রশাসন ও এজেন্সির ব্যর্থতার প্রমাণ। যখন কারো পাসপোর্ট তৈরি করা হয় তখন ভালোভাবে তদন্ত করা হয়। বিভিন্ন এজেন্সি সবধরনের তদন্ত চালায়। কিন্তু কেবল সাহারানপুরে তদন্ত চালানো যথাযথ নয়। এর মধ্য দিয়ে মুসলিমদের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য যা নিন্দনীয়।’

লক্ষনৌ ঈদগাহের ইমাম মাওলানা খালিদ রশিদি বলেন, ‘এটা খুব অদ্ভূত ব্যাপার যে কেবল দেওবন্দেই পাসপোর্ট নিয়ে তদন্ত চালানো হবে, যদিও পাসপোর্ট তৈরি হওয়ার আগে এর উচ্চ পর্যায়ে বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। এ নিয়ে জনমনে নানা সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে। যদি তদন্ত করতেই হয় তাহলে গোটা রাজ্যেই তা করা উচিত ছিল। এ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে খুব অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা উচিত।’

\

অল ইন্ডিয়া ইমাম কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মকসুদ উল হাসান কাশেমী বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় আদেশ দেয়া আসলে মুসলিমদের নির্যাতন করার ষড়যন্ত্র। উত্তর প্রদেশে মুসলিমদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে যা খুব অন্যায়। আমাদের দেশে আরডিএক্স, জাল নোটসহ অনেক অবৈধ কাজকর্ম নেপাল সীমান্ত দিয়ে প্রকাশ্যে হয়ে থাকে। কিন্তু সরকার ওইসব বিষয়ে দৃষ্টি দিচ্ছে না। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। যদি তা থাকত তাহলে নেপাল সীমান্ত পলিসি শেষ করা উচিত ছিল।’

এ ধরণের তদন্তের আদেশ মাদ্রাসাকে টার্গেট করার ষড়যন্ত্র বলেও মকসুদ উল হাসান কাশেমী মন্তব্য করেন।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১

 

ট্যাগ