'নাগরিকত্ব বিল পাস হলে অসম চুক্তি অনর্থক হয়ে যাবে'
(last modified Sun, 01 Dec 2019 08:46:34 GMT )
ডিসেম্বর ০১, ২০১৯ ১৪:৪৬ Asia/Dhaka
  • আজিজুর রহমান
    আজিজুর রহমান

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ‘ক্যাব’ পাস করলে ‘অসম চুক্তি’ অনর্থক হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ‘অল অসম মাইনরিটি সুটেডেন্টস ইউনিয়ন’ বা ‘আমসু’র উপদেষ্টা আজিজুর রহমান। আজ (রোববার) রেডিও তেহরানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন।‘

আমসু নেতা আজিজুর রহমান বলেন, ‘ক্যাব’ প্রসঙ্গে গতকাল আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সঙ্গে দিল্লিতে অসম ভবনে বৈঠক করেছি। প্রস্তাবিত ওই বিলকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য। আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি- আমরা ওই বিলের বিরোধিতা করি। কেননা ওই বিল আইনে পরিণত হলে অসম চুক্তিকে আঘাত করবে। ‘অসম চুক্তি’ অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত চূড়ান্ত সময়সীমা রয়েছে। কিন্তু এখন ‘ক্যাব’ আইনে পরিণত হলে ওই সময়সীমা আর থাকবে না। এরফলে ‘অসম চুক্তি’ বিনষ্ট হবে। সেজন্য আমরা ওই আইন মানতে পারি না। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় সংবিধানের যে স্পিরিট আছে তাও ধ্বংস হবে ওই বিল আইনে পরিণত হলে। সেজন্য আমরা ‘সংবিধান বিরোধী’ কোনও কথা মেনে নিতে পারি না।’

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ‘ক্যাব’-এর প্রতিবাদ

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে- ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, পার্শি) বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করবে তাঁদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অসমে এতবছর ধরে ‘বিদেশি সমস্যা’ রয়েছে। এখন যদি আবার নতুন করে অন্য বিদেশিদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমাদের মনে হয় অসমে আবার অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে। সেজন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, আমরা ওই বিলকে চাই না। কিন্তু অমিত শাহ বলেছেন, অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা কার্যকর করে অসমবাসীকে সমস্ত প্রকার প্রোটেকশন দেবেন। ওই বিল আইনে পরিণত হলে অসমসহ উত্তর- পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কী লাভ হবে তার কোনও ব্যাখা নেই। আমরা মনে করি এনিয়ে রাজনৈতিক চালাকি করা হচ্ছে।’

‘আমরা ওই বিলের পক্ষে নেই। প্রয়োজনে ওই বিলের বিরুদ্ধে গোটা অসম জুড়ে আন্দোলনে নামা হবে’ বলেও ‘আমসু’ উপদেষ্টা আজিজুর রহমান মন্তব্য করেছেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবেশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের ফলে এদেশে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, পার্শিদের জন্য নাগরিকত্ব আইন সংশোধন (ক্যাব)করে তাঁদের শরণার্থীর মর্যাদা দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছে। সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত বিল পাস করানোর চেষ্টা চলছে।

কিন্তু ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ দেশে এভাবে ধর্মীয়ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে বিভিন্নমহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। এরফলে স্থানীয় আদি বাসিন্দাদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়াসহ বিভিন্ন সঙ্কট সৃষ্টি হবে বলেও বিল বিরোধীরা আশঙ্কা করছেন।# 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ