ভারতের মন্ত্রিসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল অনুমোদন, রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
(last modified Wed, 04 Dec 2019 13:49:53 GMT )
ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯ ১৯:৪৯ Asia/Dhaka
  • নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ
    নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে বহুলালোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। আজ (বুধবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি অনুমোদিত হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রস্তাবিত ওই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে হিন্দু, বৌদ্ধ, পার্শি, শিখ, খ্রিস্টান যারা এদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আজ অসমের কংগ্রেস এমপি আব্দুল খালেক কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পাকিস্তান ইসলামী দেশ। কিন্তু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে আমরা সহায়তা দিয়ে থাকি। যদি বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ন হয়, সেখানে অমুসলিমদের উপরে অত্যাচার হয় তাহলে আমাদের সরকারের দায়িত্ব হল,  যে সরকার হিন্দুদের কথা বলে সেই সরকারের কর্তব্য হল তার প্রতিবাদ করা। বাংলাদেশকে যে সহায়তা দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনে সমস্ত সাহায্য বন্ধ করা উচিত। কিন্তু আমরা বাংলাদেশ, আফগানিস্তানকে সহায়তা দিতে থাকব এবং সেখানে আমাদের যে ভাই বোন তা হিন্দু হোক, খ্রিস্টান হোক বা পার্শি হোক যারা সেখানে আছে এবং তাঁরা এখানে আসবে আর আমরা নিশ্চুপ হয়ে থাকব এটা কী ধরণের কথা! এসব লোকেদের সেখানে নিরাপত্তা পাওয়া উচিত।’

শেরমান আলী আহমেদ

এ প্রসঙ্গে অসমের কংগ্রেস বিধায়ক শেরমান আলী আহমেদ রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘সরকার যদি ওই আইন পাস করে তাহলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অসম। কারণ অসমে কয়েক লাখ অমুসলিম বাংলাদেশি রয়েছে। তাঁদেরকে যদি নাগরিকত্ব দেয়া হয় অসমে ভাষা ও সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। অসমীয়া ভাষা ও সংস্কৃতিকে মুসলিমরা প্রথম থেকে গ্রহণ করেছে। অস্মীয়া ভাষা ও সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করার জন্য তাঁরা সাধ্যানুসারে চেষ্টা করেছে। কিন্তু অমুসলিম বাঙালি হিন্দুদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে অসমীয়া ভাষা বিপন্ন হবে। অসমীয়া ভাষী মানুষজন সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। অসমের রাজ্য ভাষা বাংলা হবে। অসমীয়া সংস্কৃতি ধ্বংস হবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে অসমের বাসিন্দারা।’

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট করে বিধায়ক শেরমান আলী আহমেদ বলেন, ‘এখন ওঁরা ধর্মের নামে আফিং খাইয়ে আসলে এর কী প্রতিক্রিয়া হবে তা মানুষকে বুঝতে দেয়নি। কিন্তু যখন ওই আইন পাস হয়ে যাবে তখন লাখ লাখ অমুসলিম বাঙালী হিন্দু নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে এবং তাঁরা নিজেরা বাঙালী বলে ঘোষণা করবে। বাংলা ভাষাকে তাঁদের মাতৃভাষা বলে চিহ্নিত করবে তখনই গোটা অসম জ্বলে উঠবে। সারা অসমের মানুষজন ক্ষেপে যাবে। একটা ভয়ঙ্কর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’

কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার যে নীতি নিয়েছে তার বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিআইএম-সহ আরও বেশ কয়েকটি দল। সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনে খুব শিগগিরি সরকার নাগরিকত্ব বিল পাস করানোর প্রস্তুতি নিয়েছে।# 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ