বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায়: আদভানি-উমা-যোশীরা সবাই বেকসুর খালাস
https://parstoday.ir/bn/news/india-i83487-বাবরি_মসজিদ_ধ্বংস_মামলার_রায়_আদভানি_উমা_যোশীরা_সবাই_বেকসুর_খালাস
ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানিসহ অভিযুক্ত ৩২ জনকেই বেকসুর খালাস দিয়েছে দেশটির আদালত। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ওই মসজিদটি ভেঙে ফেলার ২৮ বছর পর আজ (বুধবার) উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর বিশেষ সিবিআই আদালত এই রায় দেয়।  
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০ ১৭:০৭ Asia/Dhaka
  • আদালত চত্বরে এল কে আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী ও উমা ভারতী
    আদালত চত্বরে এল কে আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী ও উমা ভারতী

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানিসহ অভিযুক্ত ৩২ জনকেই বেকসুর খালাস দিয়েছে দেশটির আদালত। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ওই মসজিদটি ভেঙে ফেলার ২৮ বছর পর আজ (বুধবার) উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর বিশেষ সিবিআই আদালত এই রায় দেয়।  

আদালতের রায়ে বিচারক সুরেন্দ্রকুমার বলেছেন, "মসজিদ ভাঙায় অভিযুক্তদের কারও হাত ছিল না। উন্মত্ত জনতাই এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন। এর পিছনে সমাজবিরোধীদের হাতও ছিল। অভিযুক্তরা বরং মসজিদ ভাঙায় বাধা দেওয়ারই চেষ্টা করেছিলেন।’’

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-কেও এ দিন 'ক্লিন চিট' দেয় সিবিআই আদালত। বিচারক সুরেন্দ্রকুমার বলেন, ‘‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ঘটনার সঙ্গে আরএসএস এবং ভিএইচপি'র কোনো ভূমিকা ছিল না। পেছন থেকে অজ্ঞাত পরিচয় লোকজনই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন।’’

ষোড়শ শতকে নির্মিত মসজিদটি ভেঙে ফেলার ঘটনায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ছিল ৪৯। এর মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৩২ জনের কোনো অপরাধ খুঁজে পায়নি আদালত। 

বাবরী মসজিদ ধ্বংসের দৃশ্য

মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী এল কে আদভানি, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর যোশী, উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, বিজেপি’র ফায়ার ব্র্যান্ড নেত্রী উমা ভারতী এবং বিনয় কাটিয়ার ছিলেন। এই অভিযুক্তদের মধ্যে মুরলী মনোহর যোশী ও এল কে আদভানি আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি বলেছেন, “আমি আন্তরিকভাবে এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। এই রায় আমার এবং বিজেপির রাম জন্মভূমি আন্দোলনের প্রতি দায়বদ্ধতা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল।" 

মুরলি মনোহর যোশী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, “এটা একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। এতেই প্রমাণ হয়, কোনো ষড়যন্ত্র সেদিন করা হয়নি। আমাদের কর্মসূচি বা জনসভা কোনোটাই ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল না। আমরা খুশি। আমার তো মনে হয় মন্দির নির্মাণ নিয়ে সবার খুশি হওয়া উচিত।”

আইনজীবী জাফারইয়াব জিলানি

তবে, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড ইতোমধ্যেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিশেষ সিবিআই আদালতের এই রায়কে তাঁরা চ্যালেঞ্জ করবে এবং রায়ের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করা হবে। 

ল' বোর্ডের সদস্য,  আইনজীবী জাফারইয়াব জিলানি বলেছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার দিন কীভাবে অভিযুক্তরা মঞ্চ থেকে উস্কানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা তা জানিয়েছিলেন। আইপিএস অফিসার ও সাংবাদিকরাও ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন। বিশেষ সিবিআই কোর্ট তথ্য প্রমাণকে উপেক্ষা করে রায় দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে মুসলমানরা আপিল করবে। মুসলিম ল বোর্ডও আপিল করতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। 

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েকশ’ বছরের পুরোনো বাবরী মসজিদ প্রকাশ্য দিবালোকে ধ্বংস করেছিল, ‘করসেবক’ নামধারী উগ্র হিন্দুত্ববাদী ধর্মান্ধরা। তাদের দাবি, ওই স্থানটি ভগবান রামের জন্মস্থান। সম্প্রতি সেই জমিতেই রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট সেখানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল।#  

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।