দিল্লিতে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল, মৃত ১, লালকেল্লায় উড়ল নয়া পতাকা
ভারতে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানী দিল্লিতে কৃষকরা ট্রাক্টর মিছিল করেছেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রাক্টর দুর্ঘটনায় এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সাধারণত স্বাধীনতা দিবসে ঐতিহাসিক লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষকদের একাংশ সেই লালকেল্লাতেই তাদের সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন করায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আজ পুলিশের যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে ব্যারিকেড ভেঙে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা দিল্লির দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে তাদের উপরে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। বেশ কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। আজ কৃষক আন্দোলনে গোলযোগের জেরে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দিল্লিতে কমপক্ষে পাঁচটি এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিঙ্ঘু, গাজিপুর, টিকরি, মুকারবা চক, নাঙ্গলোই এলাকায় ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ হয়েছে। রাত ১২ টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট। বেশকিছু মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ ও প্রস্থান বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ নিজ বাসায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন।
নয়াদিল্লি টেন্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজধানীতে ট্রাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে কয়েকটি জায়গায় সহিংসতার কারণে মঙ্গলবার কনট প্লেস বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। নয়াদিল্লি টেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অতুল ভার্গব বলেন, বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশ কনট প্লেস বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
এদিকে, লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার পাশাপাশি অন্য পতাকা উত্তোলন করায় জাতীয় পতাকার অমর্যাদা হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। কংগ্রেস নেতা শশী তারুর এমপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেছেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক! প্রথম দিন থেকে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছি। কিন্তু এই শৃঙ্খলাহীন আন্দোলনকে মেনে নিতে পারছি না। প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় পবিত্র তেরঙা (জাতীয় পতাকা) ছাড়া অন্য কোনও পতাকা ওড়া উচিত নয়।’

কৃষক আন্দোলনের নেতা ও ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত বলেছেন, যাঁরা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছেন, তারা কৃষক নন। রাজনৈতিক দলের সদস্য। বিক্ষোভারীদের বদনাম করতেই এই কাজ করা হয়েছে।
আজ পুলিশের বাধা অতিক্রম করে একদল আন্দোলনকারী কৃষক লালকেল্লা চত্বরে ঢুকে পড়েন। গোটা লালকেল্লা চত্বর একসময়ে আন্দোলনকারীদের দখলে চলে যায়। এসময়ে তারা বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দেন। লালকেল্লায় কৃষক সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি এর গম্বুজের উপরেও উঠে পড়েন অনেকে।
কেন্দ্রীয় পর্যটন ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল বলেছেন, ‘লাল কেল্লা আমাদের গণতন্ত্রের মর্যাদার প্রতীক, আন্দোলনকারীদের উচিত ছিল লাল কেল্লা থেকে দূরে থাকা। আমি এই মর্যাদা লঙ্ঘনের নিন্দা করছি। এটি দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক।’
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এমপি বলেছেন, ‘ হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান নয়। যেই আহত হোক না কেন ক্ষতি আমাদের দেশেরই হবে। দেশের স্বার্থে কৃষি আইন প্রত্যাহার করুন।’#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।