ফ্রান্সের যুদ্ধবিমান কেনা চুক্তির তদন্তের দাবি জানালো কংগ্রেস
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস যৌথ সংসদীয় কমিটি’র (জেপিসি) মাধ্যমে ফ্রান্স থেকে কেনা রাফায়েল যুদ্ধবিমান চুক্তির তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
আজ (শনিবার) কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাফায়েল কেলেঙ্কারি হ'ল দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপস করার বিজেপির উপহার। বিজেপি ওই কেলেঙ্কারির সত্যতা থেকে বেশিদিন পালাতে পারবে না।
রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা বলেন, কংগ্রেস ও দলের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী আজ সঠিক প্রমাণিত হয়েছেন। দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সরকারি কোষাগারের ক্ষতির সঙ্গে জড়িত রাফায়েল কেলেঙ্কারির উন্মোচন অবশেষে প্রকাশ্যে এসেছে। ফ্রান্স রাফায়েল কেলেঙ্কারির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ১৪ জুন ফরাসী পাবলিক প্রসিকিউশন সার্ভিস একটি এনজিও’র অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, পক্ষপাতিত্বের বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছে।
এরআগে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর সরকারকে দেশের কাছে রাফায়েল নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে। জানাতে হবে, কেন সরকারি কোষাগার থেকে রাফাল কিনতে বাড়তি ২১,০৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হল?
ওই ইস্যুতে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সাবেক ইউপিএ-সরকার যে রাফায়েল ৫২৬ কোটি টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, মোদি সরকার তা ১,৬০০ কোটি টাকায় কিনেছে। ওই বিমান তৈরির জন্য ফরাসি সংস্থা দাসো’র কাছ থেকে দায়িত্ব পাওয়ায় বঞ্চিত হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হ্যাল’। এর পরিবর্তে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে কাজের বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল (শুক্রবার) ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগ (পিএনএফ) জানিয়েছে, রাফায়েল যুদ্ধবিমান চুক্তিকে কেন্দ্র করে নতুন করে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্ত করবে ফ্রান্স। এই উদ্দেশ্যে এক বিচারককে নিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে রাফায়েল চুক্তি নিয়ে তদন্তের দাবি খারিজ করেছিল পিএনএফ। সে সময় ‘তথ্যপ্রমাণের অভাব’ অজুহাত দেখিয়ে তদন্তের দাবি খারিজ করা হয়েছিল। এ বার ফ্রান্সের ওই পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়লো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যম রাফায়েল নির্মাতা সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের বিরুদ্ধে চুক্তির মধ্যস্থতাকারীকে ১০ লক্ষ ইউরো (প্রায় ৯ কোটি টাকা) ‘উপহার’ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। এ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্রও উপস্থাপন করে তারা। এরপরে দুর্নীতি বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে পিএনএফ-এর কাছে রাফায়েল চুক্তি নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়। এর ভিত্তিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স সরকার। এরপরেই এবার ওই ইস্যুতে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে চেপে ধরেছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/মো.আবুসাঈদ/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।