পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ:
বিদেশি শক্তির হুমকিতে ইরান এখন আর ভীত নয়, শত্রুরাও তা জানে: সর্বোচ্চ নেতা
পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে প্রমাণ হয়েছে মাতৃভূমি রক্ষা করা এবং শত্রুর হুমকি মোকাবেলার উপায় আত্মসমর্পন নয়, প্রতিরোধ। সাদ্দামের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একদল ইরানি সেনা কমান্ডার, সৈনিক ও শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আজ একথা বলেন।
পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহর প্রাক্কালে ইমাম খোমেনি (রহ) হোসাইনিয়াতে সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর সঙ্গে আজ সকালে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ক্ষমতালিপ্সু সাদ্দামের মাধ্যমে ইরানের ওপর ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়। বিপ্লবের টগবগে চেতনা, ইমামের দক্ষ ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্ব এবং ইরানী জাতির মহৎ বৈশিষ্ট্য বৃহৎ শক্তিগুলোর মারাত্মক হুমকিকে অনন্য সুযোগে পরিণত করেছে। তিনি বলেন তরুণ প্রজন্মের কাছে ইরানের এই গৌরবময় ইতিহাসকে সঠিক ও নির্ভুলভাবে বর্ণনা করার মাধ্যমে বিপ্লবের সাফল্যের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করবে।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন: নবগঠিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর সাদ্দামের মাধ্যমে ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার পেছনে সাম্রাজ্যবাদীদের বেশ কয়েকটি লক্ষ্য ছিল। প্রথমত তারা ইসলামি সরকার ব্যবস্থার পতন ঘটানোর স্বপ্ন দেখেছিল। দ্বিতীয়ত ইরানি জাতির ঐক্যে ভাঙন সৃষ্টি করা এবং সর্বোপরি আধিপত্যবাদীদের মদদপুষ্ট দেশগুলোর কাছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের শান্তি ও মুক্তির বার্তা পৌঁছানোর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। ইরাকের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধকে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ব আধিপত্যবাদী শক্তির স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বলে মন্তব্য করেন হযরত খামেনেয়ী। তিনি বলেন ইরানি জাতির বিপ্লব কেবল বলদর্পী শাসকগোষ্ঠি বিশেষ করে আমেরিকার মদদপুষ্ট একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধেই ছিল না। বরং এই বিপ্লব ছিল আধিপথ্যবাদী শক্তির হুমকির বিরুদ্ধে চপেটাঘাত। এই হুমকিকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বলদর্পী শক্তিগুলো গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিল। আর সে কারণেই তারা সাদ্দামের মাধ্যমে ইরানের ওপর আট বছর মেয়াদি যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল।
ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর ইরান আরেকটি যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না। কেননা নবগঠিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য সশস্ত্র বাহিনীসহ নিরাপত্তা বিভাগ গড়ে তুলতে সময়ের দরকার ছিল। অপরদিকে শত্রুরাও দেখছিল ইসলামি ইরানে তাদের স্বার্থ অর্জিত হবার নয়, ,তাই তারা সবসময় সমগ্র ইরানজুড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। কিন্তু তাদের ওই পরিকল্পনা যখন বাস্তবায়িত হচ্ছিলো না তখনই তারা সাদ্দামের মাধ্যমে ৮ বছরের যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধ চলাকালে সাদ্দামকে তারা অর্থ দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে এককথায় সার্বিকভাবে মদদ দিয়েছিল। আলোচনার শেষভাগে সর্বোচ্চ নেতা বলেন আল্লাহর রহমতে ইরান আজ প্রতিরক্ষা শক্তিতে এমন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে যে, কোনো বিদেশি শক্তির হুমকিতে এখন আর ইরান ভীত নয়, উদ্বিগ্ন নয়। শত্রুরাও এই বাস্তবতা সম্পর্কে খুব সচেতন বলে তিনি মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এনএম/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।