এপ্রিল ১৩, ২০২৪ ১৫:২৫ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ইসরাইলে প্রতিশোধমূলক হামলা না চালাতে জার্মানি, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বারবুক, ডেভিড ক্যামেরন এবং পেনি ওয়াংয়ের ফোন কলের জবাব দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন যে যখন ইহুদিবাদী ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং ভিয়েনা কনভেনশন না মেনে তারা নিরাপরাধ ব্যক্তি এবং কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা না চালানোর নীতি লঙ্ঘন করে এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করতে অক্ষম তখন আগ্রাসীকে শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে যেকোনো সামরিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন যে ইরান যুদ্ধের পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করছে না, তবে পশ্চিম এশিয়ার স্পর্ষকাতর অঞ্চলে স্থিতিশীল নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনা এবং ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর যুদ্ধবাজ ও ভারসাম্যহীন নেতাদের দমন করা এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের বিরুদ্ধে এই অবৈধ শাসক গোষ্ঠীর যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করার সঙ্গে তেহরানের এই সামরিক পদক্ষেপ প্রাসঙ্গিক।

একদিকে যেমন সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটানায় তেহরানের তীব্র প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্ব অন্যদিকে শহীদ ইরানি উপদেষ্টাদের সাক্ষ্য দিচ্ছে যে ইহুদিবাদীরা ভয় ও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে এবং ইরানকে শান্ত করতে বা ইসরাইলে যেনো ইরান হামলা না চালায় সেজন্য পশ্চিমা দেশগুলো তেহরানের কাছে নানা অনুুনয় বিনয় করছে ।

উচ্চপদস্থ ইরানি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কথাবার্তা এবং তাদের দৃঢ় অবস্থান থেকে এটা পরিষ্কার যে ইসরাইলকে পাল্টা আঘাত করার লক্ষ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী পরিস্থিতি এবং প্রতিক্রিয়ার মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোতে হামলা ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের সুনির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং সেইসাথে আন্তর্জাতিকভাবে সুরক্ষিত অপরাধের জন্য যেকোনো শাস্তি প্রতিরোধ ১৯৭৩ সালের কনভেনশন নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। 

দামেস্কে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কনস্যুলেটে হামলার ক্ষেত্রে ইসরাইলের বেআইনি পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক আইনে প্রতিষ্ঠিত নীতির পরিপন্থী হওয়ার পরপরই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি নানা কূটনৈতিক পদক্ষেপ শুরু করেন। জাতিসংঘের মহাসচিব এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানকে একটি চিঠিতে ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানাতে এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তের জন্য তেহরানের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয় এবং পরে রাশিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের জন্য অনুরোধ করা হয়। 

সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগে ইসরাইলি হামলার বিষয়ে গত ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে দখলদার ও বর্ণবাদীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করা হয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের পশ্চিম এশিয়া এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক সহকারী মোহাম্মদ খালিদ আল খাইয়ারি সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন- কূটনীতি বা কনস্যুলার সম্পর্কিত সকল স্থান ও ব্যক্তিকে আক্রমণের বাইরে রাখার আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে। তবে এই বৈঠকে আমেরিকার পাশাপাশি ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসে ইসরাইলি হামলার নিন্দা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই দেশগুলো হামলার নিন্দা না জানিয়ে কেবল আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।#

পার্সটুডে/এমবিএ/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

ট্যাগ