ট্রাম্পের ফের ইরান বিরোধী বক্তব্য: এ বাগাড়ম্বর চলবে আসন্ন নির্বাচন পর্যন্ত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সবসময় ইরান বিরোধী নীতি নিয়ে চলেন এবং দেশটির ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ওয়াশিংটনের অন্যায় আবদার মেনে নিতে তেহরানকে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় তিনি কংগ্রেসে দেয়া বার্ষিক ভাষণে ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে ইরানের সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করেছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার ভাষায় "পরমাণু অস্ত্র তৈরি এবং সন্ত্রাসবাদের বিস্তার থেকে ইরানকে বিরত রাখতে হবে। আমাদের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাই আমরাই পারি দ্রুত ইরানের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে। ইরানিরা নিজেদের চাইতেও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী।"
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্পের ইরান বিরোধী বাগাড়ম্বর থেকে বোঝা যায় হৈ চৈ সৃষ্টি করে তিনি ইরান বিরোধী প্রচার প্রোপাগান্ডাকে আমেরিকায় অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চালিয়ে যাবেন।
বাস্তবতা হচ্ছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পর ও এর আগে নির্বাচনী প্রচারকালেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের ইসলামি সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাত কিংবা দুর্বল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। এরপর তিনি পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ফের ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধে নেমেছেন। এরও কয়েক মাস পর পারস্য উপসাগরে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের জন্য ইরানকে হুমকি হিসেবে অভিহিত করে ট্রাম্প প্রশাসন একের পর এক ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি দিতে থাকেন।
গত নভেম্বরে ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইরানিদের আহ্বান সারা বিশ্বে পৌঁছে যাচ্ছে এবং আমরা ইরানিদের পাশে রয়েছি। ট্রাম্প এমন সময় এসব বক্তব্য দেন যখন তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন এবং এখনো কিছু দিন পরপরই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অবরোধের তালিকা ভারি করছেন। কিন্তু এরপরও ইরানকে নতজানু করতে না পারায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ তীব্রতর করেছে এবং এমনকি অন্য দেশ থেকে ওষুধ ও খাদ্যও আমদানি করতে দিচ্ছেন না
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ তার দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমি 'অর্থনৈতিক যুদ্ধ' শব্দটি ব্যবহার করেছি কারণ মার্কিন এ পদক্ষেপের কারণে ইরানের সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ট্রাম্প আবারো কাসেম সোলাইমানিকে বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী অভিহিত করে তার হত্যা করার কথা জানান। অথচ সোলাইমানি ছিলেন পশ্চিম এশিয়ায় আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অগ্রনায়ক এবং তাদের পরাজয়ে তিনি বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন।
এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইরান বিরোধী বক্তব্য ইরানকে নতজানু করতে পারবে না বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫