ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সমূহ ব্যর্থতা সত্ত্বেও স্বপ্ন দেখেই যাচ্ছে ট্রাম্প
আমেরিকার কর্মকর্তারা এমন কোনো দিন নেই যেদিন তারা ইরানের বিরুদ্ধে কোনো না কোনো বিদ্বেষী অবস্থান গ্রহণ করে না। এরপরও মার্কিন বহু সূত্র ইরান বিরোধী ওয়াশিংটনের নীতির চরম ব্যর্থতার কথা অকপটেই স্বীকার করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজের সঙ্গে আলাপকালে দাবি করেছেন: আমেরিকায় যদি নির্বাচন না থাকতো তাহলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার জন্য আলোচনার টেবিলে বসে যেত। যদিও ইতোপূর্বে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছিলেন ইরানের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না, ইরানের সঙ্গে শুধুমাত্র শক্তি ও ক্ষমতার ভাষায় কথা বলতে হবে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করার পর থেকে যতভাবেই চেষ্টা করেছেন ইরানকে তাদের চাওয়া পাওয়া অনুযায়ী আচরণে অভ্যস্থ করতে, কোনো কাজ হয় নি। পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি কার্যকর করেছে। নিষেধাজ্ঞা কঠোর করেছে।
মধ্যপ্রচ্যের দেশগুলো বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ও বিশ্বাস নষ্ট করার লক্ষ্যে মিথ্যা ও বানোয়াট কথাবার্তা বলেছে। এগুলোই ছিল ইরানের আচরণে পরিবর্তন আনার মার্কিন কৌশল। আমেরিকা ইরান বিরোধী জোট গঠনেরও চেষ্টা করেছে। কিন্তু ট্রাম্প সরকারের কোনো পদক্ষেপই তাদের আশানুরূপ ফল বয়ে আনতে পারে নি। ইরান নিজস্ব শক্তি সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে বিদেশি সাহায্য ছাড়াই নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। এখন বিশ্বের আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ইরান আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ইরানের এই প্রভাবের বিষয়টি একেবারেই অনস্বীকার্য। পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী লড়াইয়ে ইরান সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় প্রকৃত অর্থেই কাজ করেছে। সন্ত্রাসবাদ দমনে ইরানকে প্রচুর মূল্য দিতে হয়েছে। আমেরিকা যতই মিথ্যাচার করুক না কেন ইরানের বিরোধিতা করতে গিয়ে তারা জল্লাদকে 'শহীদ' কিংবা 'শহীদ'কে জল্লাদ বানাতে পারবে না।
জেনারেল কাসেম সোলাইমানি-যে কিনা পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সংগ্রামের ক্ষেত্রে ছিলেন বীরত্বপূর্ণ একজন কমান্ডার-ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনা আমেরিকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের জ্বলন্ত প্রমাণ। এরকম একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের কাছে ইরানের তো মাথানত করার প্রশ্নই আসে না। একইভাবে ইরানকেও তারা কোনোভাবেই সহ্য করতে পারবে না-এটাই স্বাভাবিক। অতএব আমেরিকা যতদিন তাদের বলদর্পিতা অব্যাহত রাখবে ততদিন মার্কিন বিরোধী নীতি থেকে ইরানকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না। ইরান সরকারের মুখপাত্র আলি রাবিয়ি এমনটাই বলেছেন। তিনি আরও বলেন আমেরিকা যেদিন দায়িত্বশীল একটি দেশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে সেদিন ইরানের আচরণেও পরিবর্তন দেখতে পাবে।#
পার্সটুডে/এনএম/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।