ইরাক ও কাতারে জারিফের সফর: আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ আজ থেকে ইরাক ও কাতার সফর শুরু করেছেন। দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে এ দেশ দু'টির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করাই তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।
ইরাক ও কাতারসহ এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে সর্বোত্তম সম্পর্ক বজায় রাখা ইরানের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম মূল লক্ষ্য। এ কারণে কুয়েতের সরকার যেদিন সৌদি আরব এবং পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসিভুক্ত অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের উত্তেজনা নিরসনের প্রচেষ্টার খবর দিয়েছিল সেদিনই ইসলামী ইরান একে স্বাগত জানিয়েছিল। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, আরব দেশগুলোর মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনের যেকোন উদ্যোগকে ইরান স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, আঞ্চলিক যেকোনো সমস্যা নিরসনে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ এবং সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা ইরানের অন্যতম বড় নীতি। তাই আমরা আশা করি এ অঞ্চলের জাতিগুলোর আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নতি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় একে অপরকে সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে উঠবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ অঞ্চলের জনগণের কল্যাণের স্বার্থে সব দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সংহতি গড়ে তোলা খুবই জরুরি। এ কারণে আঞ্চলিক যে কোন উত্তেজনা নিরসন করাকে ইরান অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। শত্রুদের হুমকি ও কৌশলের বিষয়টি উপলব্ধি করেই ইরান বারবার এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে আলোচনার কথা বলে আসছে এবং এ ব্যাপারে যেকোনো উদ্যোগে তেহরান স্বাগত জানায়। এ কারণেই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইরানসহ আরব দেশগুলোর মধ্যে 'হরমুজ শান্তি পরিকল্পনা'র প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক কামরান কারিমি আঞ্চলিক সংলাপের গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনের জন্য কাতারের মধ্যস্থতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন এ অঞ্চলের জাতিগুলোর স্বার্থে অভিন্ন হুমকির বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি এবং এ দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে বৃহৎ শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র এ অঞ্চলে উত্তেজনা ও সংকট সৃষ্টির অন্যতম কারণ। তারা মনে করে মধ্যপ্রাচ্যে সংকট সৃষ্টি, যুদ্ধ জিইয়ে রাখা এবং অস্ত্র বিক্রি করার মধ্যে তাদের স্বার্থ নিহিত রয়েছে। এ কারণে বৃহৎ শক্তিগুলো কখনোই চায় না এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার সংকটের অবসান ঘটুক এবং তারা টেকসই নিরাপত্তা ও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাক। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক সঙ্কট ও নিরাপত্তাহীনতার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। এ অবস্থায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাতার ও ইরাক সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৫