শ্রোতাদের মতামত
'পশ্চিমা মিডিয়ার অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে যাচ্ছে রেডিও তেহরান'
প্রিয় মহোদয়, আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। রেডিও তেহরানে চিঠি লিখতে বসলে প্রায়ই ঠিক করে উঠতে পারি না কোন বিষয়টা নিয়ে লিখব। কেননা প্রতিদিন এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত দিয়ে শুরু করে বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত ও কথাবার্তা ছাড়াও প্রচারিত হয় দুটি করে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান। প্রতিটি অনুষ্ঠানই সেরা, প্রতিটি অনুষ্ঠানই তথ্যবহুল, প্রতিটি অনুষ্ঠানই শিক্ষামূলক।
আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো মূলতঃ পাশ্চাত্য-নির্ভর। এসব মিডিয়া পশ্চিমাদের সরবরাহ করা খবর ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে, প্রচার করে এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলো ইউক্রেনকে ‘নির্যাতিত জাতি’ এবং জেলেনস্কিকে ‘মহান নেতা’ হিসেবে তুলে ধরছে। আর আমরা বাধ্য হয়ে সেসব পড়ছি বা দেখছি।
তবে এর বিপরীতে রেডিও তেহরান নির্মোহভাবে খবর ও প্রতিবেদন প্রচার করে যাচ্ছে। রেডিওতে প্রচারিত এবং পার্সটুডেতে প্রকাশিত খবর ও প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারছি যে, ইউক্রেন কিভাবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদারি করতে গিয়ে ইরাক ও আফগানিস্তানে সেনা পাঠিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।
মজার ব্যাপার হলো, পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও ইসরাইলকে অনেক বড় করে তুলে ধরে। অথচ এসব দেশ মিথ্যা অজুহাতে অথবা বিনা অজুহাতে ইরাক, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, লেবানন, সিরিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে, হত্যা করছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানে প্রথম পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল এই আমেরিকাই। এরাই এখন পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলে, অথচ পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার সনদে স্বাক্ষর করে না। এই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও ইসরাইলরাইতো চীন ও ইরানকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে স্বচেষ্ট।
কিন্তু এসব কথা পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলো বলে না, তাই আমাদের মিডিয়াতেও সেসব খবর তেমন একটা আসে না। তবে রেডিও তেহরান আমাদেরকে ঠিকই এসব বস্তুনিষ্ঠ খবর জানিয়ে যাচ্ছে। জানিয়ে যাচ্ছে, রাশিয়া কিভাবে বিশ্বে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রেখে চলছে। রাশিয়া কেন ও কেমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন আক্রমণ করতে বাধ্য হয়েছে, সে তথ্য আমরা পেয়েছি রেডিও তেহরানের কাছ থেকেই।
পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলোর অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে যাচ্ছে রেডিও তেহরান। বাংলাদেশের অনেক মানুষ রাশিয়াকে ভালোবাসে। দেশটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিল, তা না হলে এত তাড়াতাড়ি আমাদের পক্ষে স্বাধীনতা অর্জন করা দুরূহ হত। এছাড়া স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পুনর্গঠনেও এগিয়ে আসে। তাই ভারতের মত রাশিয়াও বাংলাদেশের বন্ধু। আর এ বন্ধুত্ব থেকেই দেশটির প্রতি বাংলাদেশিদের ভালোবাসা। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি ইসলামি ইস্যুতে ভ্লাদিমির পুতিন মুসলমানদের পক্ষে কথা বলেছেন। ফ্রান্সে মহানবী (সা.)-এর অবমাননার নিন্দা করেছেন। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করছেন। এসব কারণে এদেশের অনেকেই পুতিনকেও পছন্দ করেন।
কিন্তু পাশ্চাত্য মিডিয়ার চাপে আমাদের গণমাধ্যমে এ বিষয়গুলো জোড়ালোভাবে আসে না। দেশের মানুষের মনের কথাগুলো কেউ তুলে ধরে না। তবে এ কাজে এগিয়ে এসেছে রেডিও তেহরান। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের কথা বলে যাচ্ছে এ বেতার কেন্দ্রটি। সেজন্য আমরা রেডিও তেহরানকে ধন্যবাদ জানাই।
ধন্যবাদান্তে,
মোঃ শাহাদত হোসেন
সহকারী অধ্যাপক,ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ
কিশোরগঞ্জ-২৩০০, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।