ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩ ১১:৫১ Asia/Dhaka
  • 'মহানবী (সা.)-এর রিসালাতপ্রাপ্তি দিবসের অনুষ্ঠানটি আমাদেরকে সমৃদ্ধ করেছে'

প্রিয় মহোদয়,  আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানবেন। ২৭ রজব ছিল মহামানব মহানবী (সা.)-এর রিসালাতপ্রাপ্তির ১৪৫৭তম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে রেডিও তেহরানের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী, কলাকুশলী, শ্রোতাবন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

এই মহান দিনে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত ও শিক্ষণীয় এ অনুষ্ঠানটি আমাদেরকে সমৃদ্ধ করেছে, শিক্ষা দিয়েছে। অত্যন্ত তথ্যবহুল ও উপভোগ্য অনুষ্ঠানটির জন্য রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

আমরা সবাই তো জানি যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মানবজাতির জন্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উপহার। আমরা এ্ও জানি যে, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ কিছুই সৃষ্টি করতেন না। অর্থাৎ তাঁর উছিলায় আল্লাহ এ বিশ্বব্রাক্ষ্মন্ড সৃষ্টি করেছেন। শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সৃষ্টি করেন, তারপর অন্যান্য কিছু সৃষ্টি করেন। তাই পবিত্র কুরআন শরিফে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে জগৎসমূহের জন্য আল্লাহর রহমত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো নবুয়্যৃতপ্রাপ্তি বা রিসালাত লাভ। এ প্রসঙ্গে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনী (রহ.) বলেছেন, ‘রাসুলে খোদার রিসালাতের বার্ষিকীর চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আর কোনও দিবস নেই। কারণ, এর চেয়ে বড় কোনও ঘটনা আর ঘটেনি। অন্যান্য নবী-রাসুলের নিযুক্তির চেয়েও এ ঘটনা অনেক বেশি বড়। এর চেয়ে বড় কোনও ঘটনা থাকার বিষয় কল্পনাও করা যায় না।’

অর্থাৎ আল্লাহর প্রিয়তম হাবিব রাসুলে পাকের রিসালাতের মিশন শুরুর দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। আর এমন দিনে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে রেডিও তেহরান আমাদেরকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছে। রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান না শুনলে আমরা এ দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতেই পারতাম না। কেননা বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর বা প্রতিবেদন প্রকাশ হয় না বললেই চলে।

‘মহানবী (সা.)-এর নবুয়্যুত প্রাপ্তি দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা’ অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছি। ভাবতে ভালো লেগেছে যে, যার কারণে দুনিয়া সৃষ্টি হয়েছে, আমরা সেই মহামানবের উম্মত। ভেবে আনন্দিত হয়েছি যে, তাঁর শিক্ষা আমাদের হৃদয়ে রয়েছে। অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে যে, তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে। তিনি মানুষকে শেখালেন সাম্য, ন্যায়বিচার, ভ্রাতৃত্ব এবং প্রকৃত স্রষ্টার ইবাদত। তাঁর প্রচারিত ধর্মের শিক্ষা বিশ্ব সভ্যতাকে এতো বেশী সমৃদ্ধ করেছে যে, এর আগে সভ্যতা কখনও এতো সমৃদ্ধ ও উন্নত হয়নি। তাই অনেক অমুসলিম চিন্তাবিদ ও মনীষীও রাসূলে পাক (সা.)-কে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও মানবজাতির ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব সৃষ্টিকারী বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

অনুষ্ঠান শুনতে শুনতে ভাবছি, আমরা কত সৌভাগ্যবান। আমরা এই মহানবীর উম্মত ও অনুসারী। আর যারা তাঁর অনুসারী হতে পারেনি তাদের জন্য বেদনা অনুভব করেছি।

উল্লেখ্য যে, ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। সব নবী-রাসুলেরও নেতা তিনি। মহানবীর (সা.)-এর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন প্রত্যেক নবী। পবিত্র কুরআন বলে, মহানবীকে পাঠানো হয়েছে পুরো মানবজাতির জন্য।

আমরাতো জানি যে, মহানবী (সা.)-এর রিসালাতের লক্ষ্য ছিল মানুষের মুক্তি সাধন। এ প্রসঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বিশ্বনবী (সা.)-এর রিসালাত লাভ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মানবজাতির ইতিহাসের এই মহান মিশনের লক্ষ্য হল মানুষকে মুক্তি দেয়া এবং তাদের আত্মা ও চরিত্রকে পরিশুদ্ধ, মার্জিত ও অলঙ্কৃত করা’

১৮ ফেব্রুয়ারির বিশেষ অনুষ্ঠানটি আমাদেরকে শুধু মুগ্ধই করেনি, ইসলামের পতাকাতলে আনুগত্য স্বীকার করতে, ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করতেও উদ্বুদ্ধ করেছে।

 

ধন্যবাদান্তে, 

মোঃ শাহাদত হোসেন

সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ- ২৩০০, বাংলাদেশ।  

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ