'রেডিও তেহরান হলো বহুমাত্রিক জ্ঞানের ভাণ্ডার'
(last modified Thu, 06 Jul 2023 14:13:20 GMT )
জুলাই ০৬, ২০২৩ ২০:১৩ Asia/Dhaka
  • 'রেডিও তেহরান হলো বহুমাত্রিক জ্ঞানের ভাণ্ডার'

'আইআরআইবি ফ্যান ক্লাব বাংলাদেশ'-এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন ৯ জন। বিজয়ীদের পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো পার্সটুডেতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। আজ প্রকাশিত হলো বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার আলী সাহারদির ডিএক্সার এইচ, এম, তারেকের লেখা।

মুছে যাওয়া দিনগুলি

আমায় যে পিছু ডাকে

স্মৃতি যেন আমার 

বেদনার রঙে রঙে ছবি আঁকে।

মনে পড়ে সেই সোনালি অতীতের কথা। সালটা ছিল ১৯৯২ইং।আমি তখন ডিগ্রি ক্লাসের ছাত্র। পত্র মিতালী গাইড থেকে ঠিকানা নিয়ে রেডিও তেহরান এর বাংলা বিভাগে চিঠি পাঠালাম -পোস্ট কার্ডে-বাংলাদেশের পোস্ট বক্স এর ঠিকানায়। প্রায় এক মাস পর ডাকপিয়ন ১টি বড় হলুদ খাম নিয়ে আমার বাড়িতে হাজির। খুলে দেখি তার মধ্যে রয়েছে অনুষ্ঠান সূচী, স্টিকার ও ইংরেজি ZAMZAM ম্যাগাজিন।

সেই থেকে যাত্রা শুরু। অনুষ্ঠানসূচী থেকে ফ্রিকোয়েন্সী নিয়ে বসে পড়লাম -রেডিও তেহরান আবিষ্কার করার অভিযানে। ভাগ্য ভালো আমি আমার আব্বার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে ফিলিপস ওয়ার্ল্ডব্যান্ড রেডিওটি পেয়েছিলাম। মনে পড়ে আব্বা প্রতিদিন ফজর নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত করার পর অফিসে যাওয়ার আগে রেডিওতে হিন্দি গান শুনতেন আর রাতে অফিস থেকে ফিরে রাত ৮:৩০ মিনিটে রেডিও তেহরান শুনতেন। আজ আব্বা নেই কিন্তু তার রেখে যাওয়া রেডিও আছে আর আছে রেডিও তেহরান-এর বাংলা অনুষ্ঠান। 

তখন শর্টওয়েভে অনুষ্ঠান প্রচার হোত। শ্রবণমান ওঠানামা করত। ভালো শ্রবণমান পাওয়ায় জন্য রেডিওতে তার লাগিয়ে তার অপর প্রান্ত টেলিভিশন-এর অ্যান্টেনার সাথে সংযোগ করি। তখনকার বিশেষ অনুষ্ঠান ছিল– 'আপনার শিশু, আপনার ভবিষ্যৎ'। বলাবাহুল্য, এই অনুষ্ঠানটি পরবর্তীতে আমার ছেলের জীবনগঠনে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। 

চিঠিপত্রের জবাবের অনুষ্ঠান প্রিয়জন প্রচারিত হতো প্রতি সোম ও শুক্রবার। সোমবার প্রিয়জন এর ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৫ মিনিট আর শুক্রবার প্রিয়জন এর ব্যাপ্তিকাল ছিল ২৫ মিনিট। তখন বহির্বিশ্বের অনেক রেডিওর বাংলা বিভাগে চিঠি পাঠাতাম। কিন্তু একমাত্র রেডিও তেহরানে চিঠি লিখে এর পূর্ণ মূল্যায়ন পেতাম। অর্থাৎ অন এয়ারে প্রতিটি চিঠির জবাব পেতাম আর ডাকে পেতাম ইংরেজি ম্যাগাজিন MAHJUBAH, ZAMZAM, ECHO IF ISLAM, স্টিকার, প্রভৃতি। 

আমি বিয়ে করি ২০০৩ সালে। তখন রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগ আমাকে একটি বই পাঠায় যা আমার সুখী সংসার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য রেডিও তেহরান-এর নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ। 

আরও যে সকল অনুষ্ঠানের কথা না বললেই নয় আর তা হল- 'নারী: মানবফুল, আসমাউল হুসনা, গল্প ও প্রবাদের গল্প, জ্ঞান-বিজ্ঞানে ইরানিদের অবদান প্রভৃতি। আমার অনুরোধ হল- এসব অনুষ্ঠানগুলো বই আকারে যেন শ্রোতাদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

আমার মতে রেডিও তেহরান-এর বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রংধনু হল-সবচেয়ে সেরা। অনুষ্ঠানটি ছোটদের জন্য প্রচার হলেও সব বয়সের শ্রোতাদের উপযোগী। কারণ এতে প্রচারিত গল্প ও বিষয়গুলো খুবই বাস্তবধর্মী ও শিক্ষণীয়-যা মানুষকে মানবিক উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখবে।

সবশেষে বলতে চাই -রেডিও তেহরান হলো বহুমাত্রিক জ্ঞানের ভাণ্ডার। আমার মতে ধর্ম-বর্ণ-মত নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে রেডিও তেহরান শোনা চাই-ই।

রেডিও তেহরান জীবন সাজাতে ও বাঁচাতে-অপরিহার্য এক গণমাধ্যম। 

ধন্যবাদান্তে 

এইচ, এম, তারেক 

প্রেসিডেন্ট, উৎস ডিএক্স কর্ণার 

আলী সাহারদি 

মদনগঞ্জ, বন্দর 

নারায়ণগঞ্জ-১৪১৪ 

বাংলাদেশ 

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/৬