ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪ ২১:৫৬ Asia/Dhaka
  • রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক ও সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান সম্পর্কে মতামত

মহাশয়, রেডিও তেহরান বাংলায়, সৃষ্টিলোকের সর্বকালের কাঙ্ক্ষিত গভীর প্রেমময় বাণী পরিব্যাপ্ত হয়ে চলেছে সর্বক্ষণ সর্বত্র। খোদাভীরুরা আল্লাহ'র প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে যে ভাবধারার বিকাশ ঘটিয়ে থাকেন তার স্বপ্নময় সৌন্দর্যের বর্ণচ্ছটায় সুকোমল হৃদয়ের প্রকাশ ঘটায়। আমরা সৎ, ধার্মিক প্রভৃতি মহতি গুণের অধিকারী হয়ে যে সুন্দর পরিবেশ গড়তে পারি তা আল্লাহ'র পরিকল্পনাকে মহিমান্বিত করে। 

মানব জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আল্লাহর পথে সুন্দর হয়ে উঠতে পারে আল্লাহ'র প্রতি বিশ্বাস ও প্রেম দ্বারা। ইসলাম সর্বদা সত্য, ন্যায়, বিশ্বাস ও ভালোবাসা ও শান্তির বাতায়ন সৃষ্টি করে মানব সভ্যতার উন্নতি ঘটিয়ে থাকে। পরস্পরকে ভালোবাসা, শত্রুকে নিধন- এ তো আল্লাহ'র বচন। ধর্ম প্রত্যেকেরই আছে। তবে সেটা প্রেমময় ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে আল্লাহ'র পথেই। হে আল্লাহ, তুমি আমাদের রক্ষাকর্তা দোয়া করি সকল জীবকুলের জন্য সকল অধিকার, বাঁচার জন্য আহার প্রদান কর। সকল ভালো-মন্দের তুমিই একমাত্র বিচারকর্তা। 

আজ যখন যুদ্ধ নামক মরণব্যাধি স্বল্পসংখ্যক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ তখন আল্লাহ'র শান্তির বার্তা তা থেকে বিরত রাখতে সদা প্রস্তুত। কিন্তু অতিমাত্রায় আকাঙ্ক্ষা, হিংসা মানব সভ্যতার ধ্বংসের কারণ যুদ্ধকে ডেকে আনে। যুদ্ধ কখনো সমাধান নয়। বাঁচার তাগিদে অনেক সময় যুদ্ধ করতে হয়। ঐশী শক্তি তাদেরকে যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করে। ইতিহাস খুঁজলে দেখা যাবে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ঘটনাগুলো সে ধরনেরই।

বর্তমানে গাজায় যে বর্বর ইজরায়েল ধ্বংসলীলা চালিয়ে আসছে তা অত্যন্ত কাপুরুষোচিত। জঘন্য নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদেরকে ধিক্কার। এভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। ফিলিস্তিনিরাই জয়লাভ করবে। মানবতার খাতিরে অবিলম্বে দু'পক্ষেরই উচিত স্থায়ী যুদ্ধবিরতি করে সমাধানের রাস্তা উন্মুক্ত করা। এতে মানুষ হিসেবে আমাদের প্রকাশ ঘটবে ও সকলের মঙ্গল হবে। 

এবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপর মতামত প্রসঙ্গে আসছি-

প্রথমেই বলি, সবার প্রিয় প্রিয়জনের কথা। এই আসরে সবাই চায় নিজের লেখার উত্তর শুনতে। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুব ভালো। প্রচুর নিয়মিত পত্রলেখকদের সঙ্গে নতুন নতুন পত্রলেখকদেরও লেখা অনুষ্ঠানে স্থান পায়। গঠনমূলক ও গুরুত্বপূর্ণ লেখা অনুষ্ঠানে স্থান পাবে এ তো বলাই বাহুল্য। আমরা গুণমুগ্ধ শ্রোতারা সব সময় আমাদের লেখায় আত্মবিশ্বাসের সাথে অনুষ্ঠানের মুল্যায়ন করব। 

এবার আসছি চলতি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ঘটনাবলী নিয়ে অনুষ্ঠান দর্পন প্রসঙ্গে। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চলতি ঘটনাগুলো তাজা ও সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ। এসব ঘটনা শুনে মনের কোণে জমে থাকা ধারণার সত্যতা বেড়িয়ে আসে। অতি বাস্তবতার আলোকে তা সূচারুরূপে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয় কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক। এমনই সব বিবরণ যখন অনুষ্ঠানে শুনি তখন বিহ্বল হয়ে পড়ি।

গল্প ও প্রবাদের গল্প একটু ভিন্ন স্বাদের অনুষ্ঠান। এখানে ইরানের প্রাচীন কালজয়ী প্রবাদের গল্পগুলো সুন্দর ও শিক্ষামূলক। এ অনুষ্ঠান শুনলে জীবনবোধ সুন্দর হয়ে ওঠে। সর্বোপরি আপনাদের সুন্দর উপস্থাপনা অনুষ্ঠান শুনতে আকৃষ্ট করে। এ অনুষ্ঠানটি নিছক গল্প নয় এ যেন শিক্ষক, জ্ঞানদাতা। জীবনে চলার পথে অনেকসময় বাধা আসে বুঝে ওঠা যায় না কী করা উচিত তখন এ ধরণের অনুষ্ঠান সত্য ও ন্যায়ের এবং বাস্তবতার চোখে পথ দেখায়। 

আরেকটি কাজের অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যকথা। আমরা জানি স্বাস্থ্যই সম্পদ। তাই এহেন স্বাস্থ্যের প্রতি আমাদের নজর দিতে হবে বৈকি। তাই স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা কথা বিশেষজ্ঞ  ডাক্তার বাবুদের কাছে শুনে আমরা প্রভৃত উপকৃত হচ্ছি। স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সঠিক ও কার্যকর ধারণা পেতে আমাদের শুনতেই হবে স্বাস্থ্যকথা। শিক্ষা ও চেতনা ছাড়া সঠিক জ্ঞান লাভ সম্ভব না। এই বিষয়টিও স্বাস্থ্যকথা তার নিজস্ব ভাবধারায় উন্নীত। 

শিশু ও কিশোরদের জন্য অনুষ্ঠান রংধনু আসলে শুধু ছোটদের জন্যই নয় বড়রাও এর দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকেন। কারণ প্রচারিত বিষয়গুলো জেনে নিয়ে সেইমতো ছোটদের শিক্ষা দেওয়া যায়। অনুষ্ঠানে প্রচারিত শিক্ষামূলক, জ্ঞানবর্ধ্বক বিষয়গুলো শুনতে ভালো লাগে। ছোটদের জন্য খুবই উপযোগী একটি অনুষ্ঠান। এখানে ইমাম খোমেনীর উপর আলোকপাত সুন্দর লেগেছে। ইমামের শিশুপ্রীতি অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ ছিল বলে জানলাম এই অনুষ্ঠানে। 

এবার আসছি সুন্দর জীবন অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে। এই অনুষ্ঠানে জীবনকে সুন্দর রাখার কৌশল নিয়ে বরাবরই সুন্দর উপমা সাজিয়ে প্রচার করা হয়। শিখছি জীবনশৈলী ঠিক রাখার কৌশল। আমাদের হতে হবে নম্র, ভদ্র, অমায়িক, সুন্দর বাচনভঙ্গিসম্পন্ন ব্যক্তি। আমাদের সুঅভ্যাস দ্বারা এসব গুণ অর্জিত হতে পারে। আর এসব নিয়ে অনুষ্ঠানে খুব সুন্দরভাবে বলা হয়। আমাদের উচ্চাদর্শ, স্বাভিমান, বিনম্রতা, অধ্যবসায়, পরিশ্রম ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর এক জীবন পেতে পারি। প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে জীবনকে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল এই অনুষ্ঠান। 

ঘটনার নেপথ্যে অনুষ্ঠানে ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থ অপচেষ্টা, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, সামাজিক গণমাধ্যমে অপপ্রচার, গোপনে ইরানের জাতীয় ঐক্য নষ্ট করার অপচেষ্টার পেছনে কোন কারণ ছিল তা নিয়ে এই অনুষ্ঠান সুন্দর লেগেছে। সত্যি বলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় অপচেষ্টা ধুলোয় মিশে গেছে। 

বিশ্বসংবাদে বর্বর ইজরায়েল ও স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনের মধ্যেকার যুদ্ধের আপ টু ডেট অত্যন্ত নিখুঁতভাবে রেডিও তেহরান বাংলা বরাবরই প্রচার করে আসছে। ইজরায়েলের নীতিজ্ঞানহীন পাশবিক আচরণ ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকবে। এর বিরুদ্ধাচারণে ইরানের ভূমিকা অগ্রগণ্য। 

রেডিও তেহরান বাংলা সম্পূর্ণরূপে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, ইরানের লোকপ্রিয় নবী, মহানবী, রাসুলদের পরিচয় ঘটিয়ে আমাদের ইসলামের ইতিহাস জানতেও সাহায্য করে। আজ দিকে দিকে ধ্বনিত হচ্ছে ইরানের ইসলামী জাগরণের মূলমন্ত্র। এসবের দ্বারা ইসলামের ব্যাপকতা, আদর্শ, ত্যাগ ও সহিষ্ণুতার অপার মহিমা প্রকাশ পাচ্ছে। 

 

ধন্যবাদান্তে

দেবাশীষ গোপ

কুশমন্ডি, দক্ষিণ দিনাজপুর

পশ্চিম বঙ্গ, ভারত।  

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯

 

 

ট্যাগ