রেডিও তেহরান: সংবাদ, বিনোদন ও আদর্শের একটি পূর্ণ প্রতিষ্ঠান
গণমাধ্যম আধুনিক সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ। গণমানুষের তথ্য, শিক্ষা, বিনোদনসহ নানাধর্মী চাহিদা মেটায় গণমাধ্যম। সমাজ বিজ্ঞানীগণ গণমাধ্যমকে মূলত আটটি ভাগে ভাগ করেছেন যার মধ্যে রেডিও অন্যতম প্রধান ও শক্তিশালী গণমাধ্যম।
দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও তথ্য জানতে রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও রেডিও’র গুরুত্ব এতটুকু কমেনি ফলে যে কোনো শক্তিশালী রাষ্ট্রই গণমাধ্যম হিসেবে রেডিওকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। রেডিও তেহরান তেমনি একটি গণমাধ্যম যা ১৯৮২ সালের ১৭ এপ্রিল ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিশ্ব কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রেডিও তেহরান শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে আসছে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষী শ্রোতারা তো বটেই বিশ্বের যেসব স্থানে বাংলাভাষী মানুষ বসবাস করেন রেডিও তেহরানের কণ্ঠস্বর সেসব স্থানে পৌঁছে গেছে। নিয়মিত পরিবেশন বিশ্বসংবাদ, দৃষ্টিপাত, কথাবার্তা ছাড়াও সপ্তাহের প্রতিটি দিনেই রেডিও তেহরানে বিভিন্ন ফিচার যেমন- ইরান ভ্রমণ, ইরাক-ইরান যুদ্ধের ইতিহাস, দর্পণ, আসমাউল হুসনা, স্বাস্থ্যকথা, ছোটদের জন্য রংধনু আসর, গল্প ও প্রবাদের গল্প, কুরআনের আলো, আলাপন, পাশ্চাত্য জীবন ব্যবস্থা, আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল এবং শ্রোতাদের প্রিয় অনুষ্ঠান প্রিয়জন। এসব ফিচার সব বয়সী শ্রোতাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সাজানো হয়েছে যা রেডিও তেহরানকে পূর্ণতা দিয়েছে।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ মাসিক শ্রোতা পুরস্কার, কুইজ প্রতিযোগিতা, চিঠিপত্রের আসর প্রিয়জনে প্রাপ্ত সেরা চিঠিগুলো রেডিও তেহরানের ওয়েবসাইট পার্সটুডে ছবিসহ প্রকাশিত হয় যা একদিকে যেমন শ্রোতাদের উৎসাহিত করছে তেমনি রেডিও তেহরানের জনপ্রিয়তাও এতে বাড়ছে।
শ্রোতাদের সাথে রেডিও তেহরানের যে ঘনিষ্ঠতা তা অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতে বেশ বিরল। রেডিও তেহরানের সব শ্রোতারা যেন একই পরিবারের সদস্য। প্রতিনিয়ত নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, মতামত প্রকাশিত হচ্ছে।
গণমাধ্যমের দায়িত্বগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে রেডিও তেহরান অনন্য। বাংলাদেশের অনেক দৈনিক পত্রিকা এবং সংবাদ বিশ্লেষকগণ রেডিও তেহরানের সংবাদকে তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
অনেক সময় পশ্চিমা সমর্থিত মিডিয়াগুলো একপেশে সংবাদ পরিবেশন করে। তারা শুধুমাত্র পশ্চিমা বিশ্বের অনুকূলে সংবাদ বিশ্লেষণ করে শ্রোতাদের বিভ্রান্ত করে। এমতাবস্থায় রেডিও তেহরান একটি আস্থার জায়গা। সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে রেডিও তেহরান অনেক খবরাখবর প্রকাশ করে।
গণমাধ্যমের একটি বিশেষ দায়িত্ব হলো সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করা। কেননা, গণমাধ্যম গণমানুষেরই কণ্ঠস্বর।
আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য রেডিও তেহরান যেসব ফিচার অনুষ্ঠান প্রচার করে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। পশ্চিমা চাকচিক্য ও অতিরঞ্জনের পেছনে যে ভয়ানক বাস্তবতা লুকিয়ে আছে তা প্রকাশ করার সাহস একমাত্র রেডিও তেহরানেরই রয়েছে।
ছোটদের জন্য প্রচারিত রংধনুর আসর শিশু কিশোরদের নৈতিক ও মানসিক উন্নতিতে ভূমিকা রাখে। অনেক পিতা-মাতা ও অভিভাবকগণ তাই তাদের সন্তানদের রেডিও তেহরান শুনতে ও মতামত জানাতে অনুপ্রাণিত করছেন। বাংলাদেশের অন্য গণমাধ্যম শিশুদের জন্য এমন চমৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে আর এ ক্ষেত্রে রেডিও তেহরান নিঃসন্দেহে পথপ্রদর্শক।
রেডিও তেহরানের একটি বড় বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, রেডিও তেহরান শুধুমাত্র একটি গণমাধ্যমই নয় বরং এটি সংবাদ, বিনোদন ও আদর্শের একটি পূর্ণ প্রতিষ্ঠান। রেডিও তেহরানের সাথে জড়িত সকলের প্রচেষ্টায় এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রুশিয়া জামান রত্না
গ্রাম: গোলড়া, পোস্ট: কৈট্টা
উপজেলা: সাটুরিয়া, জেলা: মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।