আগস্ট ২৯, ২০২৩ ১৫:০৭ Asia/Dhaka

ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা ফিনানশিয়াল টাইমস বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, পরমাণু ইস্যুতে মার্কিন সহযোগিতা পেতে চাইলে কঠিন শর্ত মানতে হবে সৌদি আরবকে। কিন্তু সৌদি আরব মার্কিন শর্তাবলীকে ভালোভাবে নেয় নি।

এ অবস্থায় চীন, রাশিয়া ও ফ্রান্সের প্রস্তাব নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে রিয়াদ। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হলে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান চীনা কোম্পানিকে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্ব দেবেন।

এরিমধ্যে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, চীনের জাতীয় পরমাণু কোম্পানি সিএনএনসি সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে কাতার ও আরব আমিরাতের সীমান্তের কাছে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে।

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহু বছর ধরে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় থাকলেও সম্প্রতি তাতে ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সৌদি আরব এখন বিভিন্ন শক্তিশালী দেশকে নতুন মিত্র বানানোর চেষ্টা করছে। এর কারণ হলো, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তি, ক্ষমতা ও রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়া মেরুকরণ চলছে। নতুন নতুন জোট গঠিত হচ্ছে। সৌদি আরবের জন্য এমন সব শক্তিশালী মিত্র দরকার যারা নির্বাচন ও মানবাধিকার ইস্যুতে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করে না।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও সৌদি আরবের প্রয়োজনীয়তা অনেক হ্রাস পেয়েছে। পারস্য উপসাগর থেকে জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন, কারণ তারা নিজেদের শেল অয়েল বেসিনগুলো থেকে তেল উত্তোলন বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রয়োজনের মাত্র প্রায় ছয় শতাংশ জ্বালানি তেল সৌদি আরব থেকে আমদানি করে। এর ফলে সৌদি আরবের তেলের বিনিময়ে দেশটিকে নিরাপত্তার দেওয়ার নীতির কার্যকারিতা এখন আর নেই বললেই চলে। অন্যদিকে, চীনের জ্বালানি চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। তারা সৌদি আরবের তেলের প্রধান ক্রেতায় পরিণত হয়েছে।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে রিয়াদের দূরত্ব বৃদ্ধির আরও প্রমাণ পাওয়া যায় ব্রিকসের মতো জোটে সৌদি আরবের অন্তর্ভুক্তি থেকে। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকসের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠতা বাস্তবেও সৌদি আরবের নিরাপত্তা জোরদারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তেল উত্তোলন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইরান ও সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ইস্যুতে সৌদি আরব মার্কিন নীতির বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। সৌদি আরবের সাথে একই পথে হাঁটছে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতও। সব ডিম কখনোই এক ঝুড়িতে রাখতে হয় না বলে যে কথা প্রচলিত রয়েছে তা বাস্তবায়নে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে রিয়াদ। তারা সব ডিম পশ্চিমাদের ঝুড়িতে না রাখার নীতি গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ আসনে বসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যা মার্কিন মুদ্রা ডলার তথা পশ্চিমাদের সাম্রাজ্যবাদী নীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।#

পার্সটুডে/এসএ/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ