এপ্রিল ২৭, ২০২৪ ১৪:১৯ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলের গণহত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে
    ইসরাইলের গণহত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের গণহত্যাকে নানা কৌশলে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার মিত্ররা। আমেরিকায় বসবাসকারী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নোরা লেস্টার মুরাদ ও মরিয়ম আসওয়াদের মতে এ ক্ষেত্রে ১৪টি কৌশল অনুসরণ করা হচ্ছে। তারা এই ১৪ কৌশল নিয়ে কমিক লিখেছেন ও এঁকেছেন।

 

১-ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হত্যা-নৃশংসতার ইতিহাস মুছে ফেলতে হবে যাতে মানুষ ইহুদিবাদীদের নির্মমতার ইতিহাস জানতে না পারে।
২- সব বাস্তবতাকে অস্বীকার করে সব সময় ফিলিস্তিনিদেরক আক্রমণকারী ও আগ্রাসী হিসেবে তুলে ধরতে হবে। ফিলিস্তিনিদেরকে জালিম হিসেবে তুলে ধরে তাদের দুরবস্থার জন্য তাদেরকেই দায়ী করতে হবে।
৩- মিডিয়া বা গণমাধ্যমের ওপর একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের অপমান ও বঞ্চনাকে স্বাভাবিক প্রাপ্তি হিসেবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের হুমকি-ধমকি, বহিষ্কার এমনকি প্রয়োজনে হত্যা করতে হবে।  
৪- ফিলিস্তিনিদেরকে অমানুষ হিসেবে তুলে ধরতে হবে। গণমাধ্যমে ফিলিস্তিন, আরব ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে শব্দ ও বাক্যের বন্যা বইয়ে দেওয়া হচ্ছে। 
৫- মিথ্যা বলে সেটার ওপর অটল থাকতে হবে। পাঠক ও দর্শকের সামনে এমনভাবে মিথ্যা বলতে হবে যাতে মিথ্যাটাকেই সত্য বলে মনে হয়। মিথ্যা কথা ও তথ্যের ওপর ব্যাপক জোর দিতে হবে। 
৬- ইহুদি বিদ্বেষকে হাতিয়ারে পরিণত করতে হবে। যে ফিলিস্তিনিই তার নিজের জীবনের গল্পটা বলার চেষ্টা করবে তাকেই ইহুদি বিদ্বেষী হিসেবে অভিযুক্ত করতে হবে।
৭- লোক ভুলানোর জন্য এমন শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করতে হবে যাতে সবাই আকৃষ্ট হয়। এ লক্ষ্যে বর্ণবাদ বিরোধী ও উদার নৈতিকতা সম্পর্কিত শব্দ গুচ্ছ ব্যবহার করতে হবে।  
৮- মুক্তি বা স্বাধীনতার লক্ষ্যে তৎপরতা চালানো হলেই সেটাকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে প্রচার করতে হবে। অহিংস উপায়ে তাদের অধিকার বাস্তবায়নের চেষ্টাকেও দমিয়ে দেওয়ার জন্য সেগুলোকে অপরাধ হিসেবে তুলে ধরতে হবে।  
৯- তদন্ত ও যাচাই করা ছাড়াই ইসরাইলের দাবিগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে হবে যাতে যুক্তির ওপর আবেগ প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে। 
১০- অতীতের কিছু ভয়ানক ঘটনাকে বারবার তুলে ধরে ইহুদিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে তারা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ভয় পায়। 
১১- নানা বক্তব্য-বিবৃতি এবং বাহ্যিক কিছু ভালো কাজের মাধ্যমে এমন একটা আবহ তৈরির চেষ্টা চালাতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের কাছে মনে হয় পারস্পরিক সম্মান এবং সমতা প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে। এর আড়ালে নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। 
১২- সর্বদা নিজেদেরকে ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায়কামী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করো।  
১৩- মানুষের মন-মগজ এমন ভাবে ধোলাই করতে হবে যাতে তারা কেবল একটি পক্ষকেই সমর্থন করে। এই সত্যটাকে আড়াল করতে হবে যে, একটি ন্যায্য ও রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সকলের অধিকার, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করা সম্ভব। এমন পন্থাই কেবল সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে পারে, এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না। 

১৪-মগজ ধোলাইয়ে কাজটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়াটি পুরোদমে অব্যাহত রাখতে হবে।


*নোরা লেস্টার মুরাদ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা। তিনি একজন লেখক, শিক্ষক এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট। 
*মরিয়ম আসওয়াদ: ইরাকি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক। আমেরিকার নিউ হ্যাম্পশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। একইসঙ্গে তিনি একজন শিক্ষক, শিল্পী এবং গণিতবিদ।

পার্সটুডে/এসএ/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ