মার্চ ০৬, ২০২৪ ১২:২৬ Asia/Dhaka

গাজার ওপর ইসরাইলের নজিরবিহীন আগ্রাসন ১৫০ তম দিন তথা ৫ মাস অতিক্রম করেছে। এ যুদ্ধ আঞ্চলিক, বৈশ্বিক ও ইসরাইলের ঘরোয়া প্রেক্ষাপটে কয়েকটি বড় বার্তা বা পরিণতি স্পষ্ট করেছে। 

গত ৪ মার্চ ছিল গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন ও গণহত্যা অভিযানের ১৫০তম দিন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী এই ৫ মাসে গাজায় শহীদ হয়েছে ৩০ হাজার ৫৩৪ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছে ৭১ হাজার ৯২০ জন। এদের প্রায় ৭০ শতাংশই হল শিশু ও নারী। 

গাজার প্রায় সব অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ইসরাইলি অবরোধের কারণে সেখানে নেমে এসেছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও অনাহার। গাজার শিশুরা পশুর খাদ্য খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতসব মানবীয় বিপর্যয় সত্ত্বেও গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাফল্য ও ইসরাইলি হানাদার দস্যুদের ক্ষয়ক্ষতি মোটেও কমেনি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নির্মূল করার আস্ফালন নিয়ে সন্ত্রাসী ইসরাইল গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেও এই যোদ্ধারা এখনও পুরোদমে সক্রিয় ও রণক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য বজায় রেখেছে। ইসরাইল তার কোনো বন্দিদের এখনও উদ্ধার করতে পারেনি সামরিক অভিযান চালিয়ে। ইসরাইল যা পেরেছে তা হল কেবল নিরীহ নারী, শিশু ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা অব্যাহত রাখা।

গত সাত অক্টোবরে ফিলিস্তিনিদের আলআকসা তুফান নামক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের নেতানিয়াহু সরকার বন্দি উদ্ধারে ব্যর্থতা, সামরিক ব্যর্থতা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার জন্য তীব্র ঘরোয়া বিরোধ, চাপ ও প্রতিবাদের মুখোমুখি। বিশ্ব-জনমত ও দেশে দেশে জনগণের জনমতও ইসরাইল এবং তার সহযোগী সরকারগুলোর ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে। মার্কিন সরকার ও গোটা পাশ্চাত্যের মানবাধিকারের সমর্থক হওয়ার দাবি হয়ে পড়েছে ভূলুণ্ঠিত। 

অন্যদিকে বেশিরভাগ আরব সরকারই ফিলিস্তিন ইস্যুকে অত্যন্ত কম গুরুত্ব দিচ্ছে। কেবল ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ'র নেতৃত্বাধীন সরকার লোহিত ও আরব সাগরে ইসরাইল-সম্পর্কিত জাহাজগুলোকে বাধা দিয়ে ইসরাইলি অক্ষের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়াও লেবাননের হিজবুল্লাহ দক্ষিণের রণাঙ্গনে কৌশলী হামলার মাধ্যমে ইসরাইলকে ব্যস্ত রেখে গাজার ওপর সামরিক চাপ ও মনোযোগে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি গণহত্যার সহযোগী হয়ে মার্কিন, ব্রিটিশ, ফরাসি ও জার্মান সরকার নৈতিক দিক থেকে চরম পরাজয়ের শিকার। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার প্রস্তাবে বার বার ভেটো দিয়ে মার্কিন সরকার তার মানবতা-বিরোধী চেহারাকে আরও স্পষ্ট করল। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও শান্তি রক্ষায় তার চরম ব্যর্থতা ও অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। গাজার যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।

ওদিকে আসন্ন রমজান মাস ও বিশ্ব-কুদস দিবস ঘনিয়ে আসার প্রাক্কালে পশ্চিম তীরে আরেকটি বড় ধরনের ইন্তিফাদা বা গণ-সংগ্রাম শুরু হতে পারে বলে ইসরাইল বেশ আতঙ্কিত।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/০৬ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ