মে ০৬, ২০২৪ ০৯:৪১ Asia/Dhaka
  • প্রচণ্ড শীত ও অসহনীয় দাবদাহে অতিষ্ট গাজাবাসীর জীবন

ইহুদিবাদী ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অধিবাসী ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ভয়াবহ গণহত্যামূলক যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার পাশাপাশি তাদেরকে অভুক্ত রেখে হত্যা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইহুদিবাদী শত্রুর পাশাপাশি গাজাবাসীকে প্রাকৃতিক প্রতিকূল পরিস্থিতিও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক ত্রাণ সংস্থা আনরোয়ার উপ প্রধান স্কট এন্ডারসন বলেছেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে গাজায় রোগব্যাধির সংক্রমণ প্রতিরোধ করা এখন সেখানে খাবার পাঠানোর মতো জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রচণ্ড শীত ও তীব্র গরমে গাজাবাসীর কষ্টের কথা তুলে ধরে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে লিখেছে: “ইসরাইলি বোমাবর্ষণের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে ২৩ বছর বয়সি মরিয়ম ইরফান গত বছরের শেষদিকে যখন স্বামী ও তিন শিশু সন্তানসহ গাজা সিটির বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন তখন ছিল প্রচণ্ড শীত। তাদের আশ্রয় হয় মধ্য গাজার দেইরাল বালাহ এলাকার একটি পুরনো তাঁবুতে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের শীতের রাতগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় মরিয়মদের কষ্টের কোনো শেষ ছিল না। তাদের যেমন ছিল না শীতের পর্যাপ্ত কাপড় তেমনি ছিল না তাবু গরম করার মতো কোনো জ্বালানি। শীত শেষে এখন গাজায় গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপ। যে তাঁবুতে একদিন তীব্র শীতে মরিমরা সারারাত কাঁপত সেই তাঁবু এখন তাদেরকে সূর্যের প্রখর তাপ থেকেও রক্ষা করতে পারছে না।”

মরিয়মের কোলে থাকা দুগ্ধপোষ্য শিশু ইয়াহিয়া গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে ছটফট করছে। গাজাবাসী এই অসহায় নারী বলেন, “মনে হচ্ছে আমাদের তাঁবুতে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। শিশু সন্তানদের জন্য এই গরম অসহনীয় হয়ে উঠেছে।”

মানবতার শত্রু  ইসরাইলি বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচতে গাজার প্রায় ২০ লাখ অধিবাসী তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে এভাবে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন।  মে মাসের ৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা ও প্রচণ্ড আর্দ্রতায় এসব অসহায় মানুষ প্রকৃত অর্থেই হাঁসফাঁস করছেন। গাজা উপত্যকায় তেমন কোনো গাছপালাও নেই যে, এসব অসহায় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেবেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সাত মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনে ওই উপত্যকার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ নিহত ও ৭৭ হাজার লোক আহত হয়েছেন। এছাড়া, প্রায় আট হাজার গাজাবাসীর লাশ ধসে পড়া ভবনগুলোর নীচে চাপা পড়ে আছে। হতাহত এসব মানুষের শতকরা ৭৩ ভাগ নারী ও শিশু।

উপনিবেশবাদী ব্রিটিশ সরকার ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে সারাবিশ্ব থেকে ধরে আনা ইহুদিদের জন্য ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল যা ১৯৪৮ সালে বাস্তবায়ন করা হয়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর একের পর এক গণহত্যা চালিয়ে আসছে ইহুদিবাদীরা।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান মনে করে, ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল করে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখার কোনো অধিকার পশ্চিমাদের নেই। ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের পতন ঘটিয়ে সেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে; আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ইহুদিবাদীদেরকে তাদের নিজ নিজে দেশে ফিরে যেতে হবে।#

পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ