মার্কিন কংগ্রেসের নতুন পদক্ষেপে এক্স নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমের অস্ত্র নির্মাতারা ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার সমর্থক
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এর ইউজাররা বিশ্বের যুদ্ধ ও অশান্তিগুলোর জন্য মার্কিন সরকারকেই দায়ী বলে মনে করেন। তাদের একজন লিখেছেন: মার্কিন সরকার, ন্যাটো ও ইউরোপীয় জোট ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া ও অন্যান্য দেশে যুদ্ধ আর অশান্তির পেছনে সক্রিয় এবং এই চক্রই বর্তমানে ইউক্রেনে ও ইহুদিবাদী ইসরাইলে ব্যাপক পরিমাণ অস্ত্র পাঠাচ্ছে।
আমেরিকান করদাতাদের পকেট থেকে ইউক্রেন এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলকে বহু বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা অনুমোদনের জন্য আমেরিকান কংগ্রেসের নতুন পদক্ষেপের পরে, আমরা এই ইস্যুতে এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয়ে এক্স নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছি।
১. মার্কিন কংগ্রেসের পাগলামি
ইরানি বিশেষজ্ঞ মাসউদ বারাতি লিখেছেন, মার্কিন সরকার শত্রুদের মোকাবেলা করতে ও মিত্রদের সহায়তা দিতে পাগলের মত যা কিছু সম্ভব তাই এনেছে কংগ্রেসে। H.R. 815 ইরান, চীন এবং রাশিয়ার মুখোমুখি হওয়া থেকে শুরু করে ইউক্রেন এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের শাসনকে সমর্থন করা পর্যন্ত। বাইডেনও স্বাক্ষর করেন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই আইনের অর্থ বা তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো শান্তির শত্রু
মাহদি এতেজাদিও মনে করেন ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সরকার, ন্যাটো ও ইউরোপীয় জোটের সমর্থনগুলো শান্তির জন্য ধ্বংসাত্মক। রাশিয়া সর্বোচ্চ মাত্রায় নমনীয়তা দেখিয়ে নিজের নিরাপত্তা রক্ষার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু ইউরোপে ন্যাটোর কর্তৃত্বকামী কাঠামো ইউরোপের সব দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতাকে বিপদাপন্ন করেছে।
৩. ইউক্রেনে অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়ে লাভবান হচ্ছে মার্কিন সওদাগররা
পশতুভাষী এক্স ইউজার আন্দেখমান জাজায়ি প্রশ্ন করেন যে বিশ্বে কারা যুদ্ধ বাধিয়ে ফায়দা তুলছে ও কারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? মার্কিন কংগ্রেস সংঘাত অব্যাহত রাখতে ৯৯ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে। এর ৬১ বিলিয়ন ইউক্রেনের জন্য ও ২৯ বিলিয়ন ইসরাইলের জন্য এবং ৯ বিলিয়ন তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা খাতে দেয়া হবে।
৪. ইউক্রেন যুদ্ধ মার্কিন জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে
একজন ইউজার লিখেছেন: ইউক্রেন ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে বিস্ময়করভাবে। এর কারণ অর্থনৈতিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি যখন নজিরবিহীন তখন মার্কিন জনগণ দেখছে যে হাজার হাজার কোটি ডলার করের অর্থ খরচ করা হচ্ছে ইউক্রেন ও ইসরাইলের জন্য। অথচ অনেক কষ্ট স্বীকার করে এইসব কর পরিশোধ করছেন মার্কিন জনগণ। ফলে বিঁধেনের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়েছে বিস্ময়কর ঘৃণা!
৫. সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও প্রতিরোধ অক্ষের উচ্চতর শক্তি
ইরানি নারী সাবেরই লিখেছেন, হিজবুল্লাহ, আনসারুল্লাহ ও ইরাকের হাশদ্ আশ শাবয়ি ইউক্রেনের তুলনায় যে অর্থ সহায়তা পায় এক হাজার গুণের চেয়েও কম। কিন্তু তাদের খঞ্জরগুলো শত্রুর হৃদয় পর্যন্ত প্রবিষ্ট হয়েছে। এইসব গ্রুপকে যদি অমন বেশি নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হত তাহলে ইসরাইল ও আমেরিকার আর কিছুই বাকি থাকত না!
৬. ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে ইউরোপ ও ন্যাটোর অর্থ ব্যবহার করছে মার্কিন সরকার
বিঝান সোহরাবি নামের একজন ইরানি ইউজার লিখেছেন: মার্কিন সরকার চায় ইউরোপের অর্থ দিয়ে ন্যাটোর পোশাক পরে যুদ্ধ করতে এবং রাশিয়া ও চীনকেও নিয়ন্ত্রণ করতে। কিন্তু ইউরোপের বা অন্তত ন্যাটো জোটের বেশিরভাগ দেশের এই সহযোগিতা দেয়ার মত অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই। তারা এখন নিজেদেরকে রাশিয়ার বিশাল বাজার থেকে বঞ্চিত করেছে এবং রাশিয়ার গ্যাস থেকে পূর্ণাঙ্গ সুবিধা নিচ্ছে না। ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা এখনও অজ্ঞাত।
৭. ইউক্রেনে পশ্চিমা সাহায্যের ফলাফল শূন্য
রুশ ইউজার ড্যানিয়েল গ্রিবুফ লিখেছেন: দুই বছরের যুদ্ধে পাশ্চাত্য ইউক্রেনকে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ইউরো দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর আগে তারা এই অর্থের তিন চতুর্থাংশ অনুমোদন করেছিল। কিন্তু ফলাফল কি? শূন্য। তাই এই সাহায্য খুব শিগগিরই থেমে যাবে!!!
৮. ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে পাশ্চাত্যের শত্রুতার বলির পাঠা!
একজন ইউজার লিখেছেন: ইউক্রেন মার্কিন প্রচারণার বলির পাঠা। রাশিয়া যা কিছু দেখাচ্ছে তা হল ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেসবে ইউক্রেনকে সজ্জিত করেছে পাশ্চাত্য। ইউক্রেন ও পাশ্চাত্যই এরচেয়ে অনেক বেশি হারিয়েছে, রাশিয়া নয়।
৯. পাশ্চাত্য ইউক্রেনে যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে চায়
অন্য একজন ইউজার লিখেছেন: কেউই যুদ্ধ থামানোর আহ্বানে কান দিচ্ছে না, কারণ পাশ্চাত্য ও ইউক্রেন মোটেই সংঘাত থামাতে আগ্রহী নয়।
১০. পাশ্চাত্যের মোকাবেলায় রাশিয়ার উচ্চতর প্রতিরক্ষা ক্ষমতা
অন্য একজন রুশ ইউজার লিখেছেন: রাশিয়া এক আঘাতের জবাবে দশ আঘাত হানবে। ইউক্রেন ও মার্কিন সরকার পরাজিত হবেই। ইতালিয় দৈনিক ফাত্তো কৌতিদিয়ানো লিখেছে: মার্কিন সরকার আরও একবার ইউক্রেনকে অর্থনৈতিক সহায়তা অনুমোদন করেছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে অর্থহীন যুদ্ধ দীর্ঘ করছে। এই সংঘাতে পাশ্চাত্যের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।
১১. বিশ্বে অশান্তি ও সংঘাতের ঘটক মার্কিন সরকার
এক্স সামাজিক মাধ্যমের অন্য একজন ইউজার লিখেছেন, পাশ্চাত্য কতটা পাগল! মার্কিন সরকার, ন্যাটো ও ইউরোপীয় জোট ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, ও যুগোস্লাভিয়ার অশান্তির নেপথ্য ঘটক এবং এখন বিপুল সমরাস্ত্র ইউক্রেন ও ইসরাইলে পাম্পিং করছে! অন্যদিকে তারা রাশিয়াকে সাহায্য দেয়ার কারণে চীনের নিন্দা করছে! এ থেকে বোঝা যায় কোন্ ধরনের পাগলগুলো পাশ্চাত্যকে নেতৃত্ব দিচ্ছে!
# পার্সটুডে/এমএএইচ/০৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।