যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, দেশবাসীকেই বিচার করতে হবে: মিরপুর-১০ পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী
ঢাকার মিরপুর-১০ মেট্রো রেল স্টেশন পরিদর্শন শেষে সারাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় দেশবাসীর কাছে বিচার চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের বিচার করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায়বিচার চাইছি। ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।’
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্রো রেলস্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমের উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত কণ্ঠে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো রেলস্টেশন ঘুরে দেখেন। গত শুক্রবার মেট্রো রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়
কোটা আন্দোলনকে পুঁজি করে যারা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেল করার সময়ও অনেক বাধাবিঘ্ন আমাদের অতিক্রম করতে হয়েছিল। সব বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে এই মেট্রোরেল আমরা করে দিয়েছি এবং সময়ের আগেই আমরা করতে পেরেছি। আজ মেট্রোরেল বন্ধ। কারণ, এই স্টেশন সেভাবে ধ্বংস হয়েছে, যেটা সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক সিস্টেম, সম্পূর্ণ মডার্ন। এটা কত দিনে ঠিক হবে আমি জানি না। কষ্ট পাবে কিন্তু মানুষ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কষ্ট আমি লাঘব করতে চেয়েছি, সেই কষ্ট আবার যারা সৃষ্টি করল, তাদের বিরুদ্ধে আপনাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এর বিচার তাদের করতে হবে। আমি তাদের কাছেই বিচার চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দুঃখ লাগে, ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করল, আমি সঙ্গে সঙ্গে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো। সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার বিরুদ্ধে সরকার আপিল করল। সেই সময়ে হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে তাঁরা একটা সময় (সুপ্রিম কোর্ট) দিলেন। এই সময়ের মধ্যে সবার বক্তব্য শুনে তাঁরা একটা সিদ্ধান্ত দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোলনকারী থেকে শুরু করে দেশবাসীকে বললাম, একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এটা তো সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। সেই আশ্বাস দিয়ে তাদের বললাম বিরত থাকতে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে। যেকোনো নগারিককেই তো আইন–আদালত মেনে চলতে হবে। আর এ সুযোগ নিয়ে সেই ১৭ জুলাই থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু হলো।’
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যে মেট্রোর লাইনের নিচে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটওভার ব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। টিকেট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। একই দিনে পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়।#