সৌদি সরকারকে বার্তা: ইয়েমেন যুদ্ধ মোটেও তাদের অনুকূলে নয়
(last modified Sun, 21 Nov 2021 14:05:04 GMT )
নভেম্বর ২১, ২০২১ ২০:০৫ Asia/Dhaka

ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের আগ্রাসনের মোকাবেলায় তারাও পাল্টা অষ্টম বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে।

১৯ আগস্ট থেকে ইয়েমেনি যোদ্ধারা বিভিন্ন ধরনের অভিযান শুরু করে। ওই তারিখে তারা প্রথম সৌদি আরবের ১২০০ কিলোমিটার গভীরে পূর্বাঞ্চলীয় শহর আল দাম্মামে আরামকো তেল স্থাপনায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আত্মরক্ষামূলক ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল। আরামকো তেল স্থাপনায় ১০০ কোটির বেশি ব্যারেল তেল মজুদ রয়েছে। এরপর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইয়েমেনিরা সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় বাকিক ও খারিস দুটি তেল ক্ষেত্রের ওপর দ্বিতীয় দফা আত্মরক্ষামূলক অভিযান চালায়। এই হামলার ফলে সৌদি আরবের তেল উৎপাদনের পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমে যায় এবং বিশ্বে তেলের দাম প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়ে যায়। 

ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত সরকারের সেনাবাহিনী সৌদি আরবে তৃতীয় বড় ধরনের আত্মরক্ষামূলক হামলা চালায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। এবার তারা আরামকো তেলক্ষেত্রের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অবস্থানে হামলা চালায়। এরপর ইয়েমেনিরা গত বছর জুনে সৌদি রাজধানী রিয়াদের তথ্য ও সামরিক স্থাপনায় চতুর্থ দফা আত্মরক্ষামূলক অভিযান চালায়। এ ছাড়া চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি ইয়েমেনি যোদ্ধারা পঞ্চম দফা আত্মরক্ষামূলক অভিযান চালায় সৌদি আরবে। এবারের অভিযানে তারা রাজধানী রিয়াদ, আবহা ও খামিস শহরে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনে হামলা চালায়। এর ১০ দিন পর গত ১৭ মার্চ ইয়েমেনিরা ষষ্ঠ দফা বড় অভিযান চালায় সৌদি আরবের জাতীয় তেল কোম্পানি ও পূর্বাঞ্চলীয় আল দাম্মাম সামরিক স্থাপনায়। এ ছাড়া দক্ষিণের আসির ও জিজানেও ইয়েমেনিরা হামলা চালিয়েছে। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে সপ্তম দফা ও এরপর সর্বশেষ সম্প্রতি অষ্টম দফা অভিযান চালায়। এ অভিযানে তারা আবারো আরামকো, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

যাইহোক ইয়েমেনি যোদ্ধারা বেসামরিক কোনো স্থাপনায় হামলা চালায়নি বরং তারা সৌদি জাতীয় অর্থনীতি ও সামরিক স্থাপনাকে টার্গেট করেছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইয়েমেনি যোদ্ধারা অষ্টম অভিযানে রাজধানী রিয়াদসহ সৌদি আরবের একেবারে গভীরে হামলা চালিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় ইয়েমেনিরা আত্মরক্ষার্থে এতোটা শক্তি অর্জন করেছে যে তারা সৌদি আগ্রাসন ঠেকাতেও পারবে আবার তাদের ওপর আঘাতও হানতে পারবে। ফলে সৌদি সরকারের কাছে এ বার্তাই পৌঁছে গেছে যে চলমান যুদ্ধ মোটেও তাদের অনুকূলে নয়। ইয়েমেনিরা এমন সময় সর্বশেষ যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে যখন তারা মাআরিব প্রদেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে এবং পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সৌদি-আমিরাত নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট এমন সময় মাআরিব থেকে পিছু হটে গেছে যখন তারা প্রতিদিন ইয়েমেনে বোমা বর্ষণ করে চলেছে। এ অবস্থায় ইয়েমেনিদের সামরিক শক্তি সৌদি আরবকে চিন্তিত করে তুলেছে।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২১ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।