গণ-প্রতিরোধের মুখে ইরিত্রিয়ায় ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধ!
(last modified Sun, 10 Jul 2022 15:12:28 GMT )
জুলাই ১০, ২০২২ ২১:১২ Asia/Dhaka
  • গণ-প্রতিরোধের মুখে ইরিত্রিয়ায় ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধ!

ইহুদিবাদী ইসরাইলের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ ইরিত্রিয়ায় ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইহুদিবাদী ইসরাইল পাশ্চাত্যের সেবাদাস গোছের কয়েকটি আরব সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়। এই সরকারগুলোর মধ্যে রয়েছে পশ্চিম এশিয়ার আরব আমিরাত ও বাহরাইন এবং আফ্রিকার সুদান ও মরক্কো সরকার।

 ইসরাইল এ অঞ্চলে রাজনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে থাকায় এইসব সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে অন্য সরকারগুলোকেও নিজের দিকে আকৃষ্ট করার আশা করছিল।

কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণ অবৈধ, বর্ণবাদী ও মুসলমানদের প্রথম কিবলাসহ প্রায় গোটা ফিলিস্তিনের দখলদার শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রবল বিরোধী। যেমন, মিশরের জনগণ ২০১১ সালে কায়রোস্থ ইসরাইলি দূতাবাসে হামলা চালালে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রাতের আঁধারে মিশর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

 বাহরাইনের জনগণও অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সঙ্গে দেশটির স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে এবং এখন প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু মার্কিন ও সৌদি সরকারের মদদপুষ্ট বাহরাইনের রাজতান্ত্রিক সরকার বর্ণবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তার অজনপ্রিয় শাসনকে টিকিয়ে রাখার আশায় এ সম্পর্ককে দিনকে দিন জোরদার করছে। 

ইসরাইল যে অপরাজেয় কোনো শক্তি নয় লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর হাতে বার বার ইসরাইলের পরাজয় ও গাজায় হামাসের কাছেও অপদস্থ হওয়া থেকে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। গণ-প্রতিরোধ যে ইসরাইলকে মোকাবেলার সর্বোত্তম পন্থা তা ইরিত্রিয়ার ঘটনায়ও স্পষ্ট হল।    
 
ইরিত্রিয়ার সরকার ও জনগণ ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রবল বিরোধিতা অব্যাহত রাখায় ইসরাইলের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ আসমারায় তথা ইরিত্রিয়ার রাজধানীতে ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধ করার নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছে। প্রায় দু'বছর ধরে এখানে ইসরাইলের কোনো রাষ্ট্রদূত ছিল না। সর্বশেষ ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ২০১৮ সালে ইরিত্রিয়া ছেড়ে যায় এবং এর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করতে পারেনি বর্ণবাদী ইসরাইল। গত জুলাই মাসে ইসরাইল সেখানে এক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদূত বলে নিয়োগ দিলেও ইরিত্রিয়ার সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে।  

২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এই দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মীই ছিল ইসরাইলের একমাত্র প্রতিনিধি! দীর্ঘকাল ধরে ইরিত্রিয়া থেকেও কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইসরাইল সফরে যাননি। আফ্রিকার এই দেশটিতে ইসরাইলের সম্পত্তি বলতে যা রয়েছে তা হল খালি পড়ে থাকা ইসরাইলি দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের শূন্য বাসভবন এবং তার গাড়ি চালকের  শূন্য ঘর! স্থানীয় একদল নিরাপত্তা-কর্মীর বেশিরভাগই এখন এইসব ভবন পাহারার কাজ বাদ দিয়ে নিজ নিজ বাসভবনেই থাকছেন। 

ইরিত্রিয়ায় ইসরাইলি দূতাবাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আফ্রিকার শৃঙ্গ বলে পরিচিত অঞ্চলে ইসরাইলি স্বার্থ বিপদের মুখে রয়েছে। কিন্তু ইরিত্রিয়ার সরকার ও জনগণের প্রতিরোধকামী ভূমিকা অন্যান্য দেশ ও সরকারগুলোর জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে যাতে আপোসকামী সরকারগুলো ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে বাধ্য হয়। # 

পার্সটুডে/এমএএইচ/১০