কুদস দিবসে হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর বক্তব্য
(last modified Fri, 14 Apr 2023 12:05:33 GMT )
এপ্রিল ১৪, ২০২৩ ১৮:০৫ Asia/Dhaka

লেবাননের হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ কুদস দিবস উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। বক্তৃতায় তিনি অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন: হিজরি ১৪৪৪ সালের কুদসে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠি নজিরবিহীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। এই পরিস্থিতি ইসরাইলের অভ্যন্তরে গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ইসরাইলের অভ্যন্তরে অনেক আগে থেকেই একের পর এক ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেই ফাটল এখন আরও বৃহৎ ও সুগভীর হয়েছে। অধিকৃত ভূখণ্ডে তীব্র দ্বিমেরুতা বিরাজ করছে। ইসরাইলের রাজনৈতিক কাঠামো চরম উগ্রপন্থি ইহুদিবাদের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইহুদিবাদী ইসরাইল সবসময় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বিদেশী শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধকে এজেন্ডায় রাখে। কিন্তু এবার ইসরাইলের অস্তিত্বের হুমকি ভেতর থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। জাতিগত বিভাজন ছাড়াও রাজনৈতিক এবং এমনকি নিরাপত্তাগত বিভেদও চরমে পৌঁছেছে।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের কর্মকর্তারা এখন তাদের সরকারের পতনের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে প্রতিরোধ শক্তিগুলো নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করছে। ঐক্য ও সংহতি, প্রতিরোধ শক্তির বিস্তার, প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনসমর্থন বৃদ্ধির ঘটনাও  আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন: এ বছরের প্রতিরোধ বিগত বছরগুলোর সমস্যাকে জয় করেছে এবং কর্তৃত্ব ও সংহতির সাথে সেইসব সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে। তিনি বলেন: ইহুদিবাদী ইসরাইল গভীর অভ্যন্তরীণ সংকটের সম্মুখীন। বিগত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এরকম সংকটের মুখে পড়তে দেখা যায় নি তাদের।

আঞ্চলিক পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হল মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন। ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এই দুটি দেশ মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের দুটি প্রধান শক্তি। দীর্ঘ সময় ধরে দেশ দুটোর মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। তাদের মধ্যকার নতুন পর্যায়ের সম্পর্ক প্রতিরোধের অবস্থানকেও প্রভাবিত করবে। এদিকে ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। প্রতিরোধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে আনসারুল্লাহর ওপর চাপ কমে যাচ্ছে। একইভাবে সিরিয়ার সাথে সৌদি আরব এবং তুরস্কসহ এ অঞ্চলের কয়েকটি দেশের বৈরিতা হ্রাস পেয়েছে। এইসব উন্নয়ন প্রতিরোধের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ মনে করেন: এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে সমস্যার সমাধান হলে মুসলিম উম্মাহর মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সংঘাতের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। এইসব সমস্যা মুসলিম উম্মাহর শত্রু ইহুদিবাদীরাই তৈরি করেছে এবং জিইয়ে রেখেছিল। সুতরাং ইসরাইল নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংকট যেমন মোকাবেলা করছে তেমনি মুসলিম বিশ্বে বিভেদ সৃষ্টিতে তাদের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতাও প্রত্যক্ষ করছে। মধ্যপ্রাচ্যে চীনের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ছে এবং মার্কিন একক আধিপত্যের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে জনাব নাসরুল্লাহ বলেন: বিশ্ব একটি বহুমেরুকেন্দ্রিক ব্যবস্থা গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আমেরিকার একাধিপত্যের অবসান ঘটবে। আমেরিকার আধিপত্য যতই কমবে ততই ইসরাইল দুর্বল হয়ে পড়বে। কেননা আমেরিকাই ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠপোষক।#

পার্সটুডে/এনএম/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ