আল-শিফা হাসপাতালে মানবিক সংকট
গাজায় ২৪ ঘণ্টায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত; উপত্যকার অর্ধেক ঘরবাড়ি ধ্বংস
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে দখলদার ইসরাইলি সেনাদের বিমান ও স্থল হামলায় আরো বহু ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইহুদিবাদী যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর এসব ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হলেন।
রোববার গাজা সিটির সাবরা মহল্লার হামদান পরিবারের বাড়িতে ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সেখানকার ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধারকারী দল চারটি মৃতদেহ বের করে এনেছে। মধ্য গাজার দেইরাল বালাহ এলাকার স্থানীয় অধিবাসী আব্দুল্লাহ আল-আদিনির বাড়িতে আলাদা ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়।
এছাড়া, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের কাছে নাজ্জার পরিবারের বাড়িতে রোববার ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে অক্সিজেন ঘাটতির কারণে, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে মারাত্মক অসুস্থ পাঁচ রোগী ও তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জ্বালানির অভাবে গাজার বৃহত্তম এই হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাসপাতালের আরো বহু রোগীর মৃত্যু এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
হাসপাতালটি চারদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ইহুদিবাদী সেনারা। তারা রোববার হাসপাতালটির আইসিইউ বিভাগে গোলাবর্ষণ করলে বেশ কয়েকজন আহত হন। হাসপাতালটির আঙ্গিনায় ও আশপাশে কয়েক ডজন লাশ পড়ে থাকলেও গোলার আঘাতের ভয়ে সেগুলোর কাফন-দাফন করার জন্য কেউ এগিয়ে যেতরর পারছে না।
গাজা উপত্যকায় অবস্থিত ইউএনডিপির সদরদপ্তরেও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে ওই দপ্তরে আশ্রয় গ্রহণকারী পাঁচ বাস্তুচ্যুত মানুষ নিহত ও অপর ১৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার থেকে গাজায় নিহতদের সংখ্যা হালনাগাদ হচ্ছে না: জাতিসংঘ
জাতিসংঘ বলেছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার থেকে ওই উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় হতাহতদের সংখ্যা হালনাগাদ করছে না। জ্বালানীর অভাব এবং ইসরাইলি হামলার কারণে অবরুদ্ধ গাজার কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটেছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
শুক্রবার পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি পাশবিক হামলায় ১১,০৭৮ ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। গত ৭ অক্টোবর থেকে ওই দিন পর্যন্ত গড়ে ইসরাইলি হামলায় প্রতিদিন ৩২০ ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছিল। নিহত এসব হতভাগ্যদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজার অর্ধেকের বেশি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। #
পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ১৩