হামাসের সম্মতিকে দৃশ্যত মেনে নেয়নি ইসরাইল
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি: ‘বল এখন ইসরাইলের কোর্টে’
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে গতকাল (সোমবার) শেষ বেলায় প্রকাশিত এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাসের পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতার ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের একথা জানিয়ে দিয়েছেন যে, তার সংগঠন গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল দৃশ্যত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেয়নি। তবে এই যুদ্ধবিরতি যদি কার্যকর হয় তাহলে তা হবে ২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষদিকে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ।
হানিয়া সোমবার যে প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন সেটি মূলত কাতার ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের তিন-ধাপের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা। ওই পরিকল্পনায় ধাপে ধাপে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীর নিজ নিজ ঘরবাড়িতে ফিরে যাওয়া এবং বন্দি বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে।
হামাসের ডেপুটি পলিটব্যুরো প্রধান খলিল আল-হাইয়্যা বলেছেন, বাস্তবায়নের দিক দিয়ে এই ধাপগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং প্রথম ধাপ বাস্তবায়িত হলেই দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন শুরু হবে। তিনি বলেন, বল এখন ইসরাইলের কোর্টে এবং এখন সে এই প্রস্তাব মেনে নেবে কিনা তা তেল আবিবের ওপর নির্ভর করছে।
হামাসের এই নেতা আরো বলেন, মধ্যস্থতাকারীরা তাদেরকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রস্তাবিত এই চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন।
হামাসের পক্ষ থেকে এমন সময় যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হলো যখন সংগঠনটির কর্মকর্তারা সোমবার দিনভর বলে আসছিলেন, ইসরাইল যদি গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফায় আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তাহলে যুদ্ধবিরতির আলোচনা বন্ধ করে দেয়া হবে।
এদিকে সোমবার রাফা শহরের পূর্ব অংশে ইসরাইলের সীমান্ত লংলগ্ন এলাকা থেকে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তেলআবিব। দৃশ্যত সেখানে আগ্রাসন চালানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দখলদার সেনারা।
মার্কিন সরকার বলেছে, রাফায় বড় ধরনের অভিযান চালানোর ব্যাপারে তেল আবিবকে সতর্ক করে দিয়েছে ওয়াশিংটন।
হামাসের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসরাইলি সেনা মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, তার বাহিনী রাফায় আগ্রাসন চালাবে নাকি বন্ধ করবে তা তিনি নিশ্চিত করতে পারছেন না। তবে তিনি বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে পণবন্দিদের মুক্ত করে আনার প্রতিটি সুযোগ’ কাজে লাগাবে ইসরাইল।
এদিকে বাইডেন সোমবার বিকেলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি তেল আবিবের রাফা আগ্রাসনের পরিকল্পনার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের উদ্বেগের কথা নেতানিয়াহুকে জানিয়েছেন। সৌদি আরবও প্রচণ্ড ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরে আগ্রাসন চালানোর ব্যাপারে ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়েছে। #
পার্সটুডে/এমএমআই/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।