জেনিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের মধ্যেই উত্তর গাজায় যুদ্ধাহত ফিলিস্তিনিরা ফিরতে শুরু করেছে
(last modified Mon, 27 Jan 2025 11:37:52 GMT )
জানুয়ারি ২৭, ২০২৫ ১৭:৩৭ Asia/Dhaka
  • জেনিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের মধ্যেই উত্তর গাজায় যুদ্ধাহত ফিলিস্তিনিরা ফিরতে শুরু করেছে

আজ (সোমবার) সকাল থেকে ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের উত্তর গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থী উপকূলীয় আল-রশিদ রাস্তা দিয়ে গাজা শহর এবং উত্তর গাজা উপত্যকায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন। আজ সকালে ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ঘোষণার পর থেকে উদযাপন শুরু করে। পার্সটুডে অনুসারে,ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস) এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি বিজয় এবং এর অর্থ দখলদারদের পরাজয় এবং গাজা উপত্যকায় জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে।

হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাদের বাড়িতে ফিরে আসার মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হয়েছে যে দখলদার সরকার তাদের ইচ্ছাশক্তি এবং প্রতিরোধ বুহ্য ভেঙ্গে ফেলার জন্য যে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল তা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।  

এই প্রেক্ষাপটে হামাসের মুখপাত্র আব্দুল লতিফ আল-কানুয়াও এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছেন যে ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমিতে অবিচল থাকবে এবং তাদেরকে বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে। তিনি আরও বলেন, "ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের ভূমিতেই থাকবে এবং তারা কোথাও যাবে না। ১৫ মাস ধরে নৃশংস যুদ্ধ চালিয়েও লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর এই চুক্তিতে সই করতে বাধ্য হয়েছে। দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগ্রামীদের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে নি, হামাসকে নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং গাজা উপত্যকার সামরিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। গাজার রকেট তথা ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি নিশ্চিহ্ন করতে স্থল অভিযানসহ সব ধরণের চেষ্টা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। আল-আলম টিভি চ্যানেলের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, এই  চুক্তিটি তিনটি ধাপে বাস্তবায়িত হবে এবং গত ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয়। 

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপটি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে। উভয় পক্ষ হামলা-পাল্টা হামলা বন্ধ রেখে সীমিত পরিসরে বন্দি বিনিময় করবে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে গাজার জনবসতিপূর্ণ সব এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইসরাইল এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যেতে পারবেন। গাজায় পৌঁছানো হবে মানবিক সাহায্য।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের আল-আকসা অভিযানের সময় আটক নারী, শিশু ও পঞ্চাশোর্ধ বেসামরিক নাগরিকসহ ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। যাইহোক গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ অপসারণের অভিযান শুরু হয়েছে এবং প্রতিদিন উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও বেশি সংখ্যক শহীদকে বের করা হচ্ছে। 

একই সময়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে আরও ২৩ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন যার ফলে মৃতের সংখ্যা ৪৭,৩০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুসারে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে   শুরু হওয়া গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইসরাইলি সরকারের আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি শহীদের সংখ্যা ৪৭,৩০৬ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,১১,৪৮৩ জনে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে আরও ঘোষণা করেছে যে ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তাঘাটে এখনও বিপুল সংখ্যক ভুক্তভোগী রয়েছেন যাদের কাছে ত্রাণ বাহিনী পৌঁছাতে পারছে না।#

পার্সটুডে/এমবিএ/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।