গাজায় প্রতিরোধ ফ্রন্টের সর্বশেষ পরিস্থিতি
বেন গুরিওনে ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা; ইসরাইলি সেনার বিরুদ্ধে আল-কাস্সামের অভিযান
-
ইসরাইলের বেন গুরিওন বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমন।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, তার দেশের বিপ্লবী সশস্ত্র বাহিনী ইহুদিবাদী ইসরাইলের তেল আবিবে অবস্থিত বেন গুরিওন বিমানবন্দরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।
পার্সটুডে অনুসারে, ইয়াহিয়া সারি রোববার এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী একটি অনন্য সামরিক অভিযানে অধিকৃত জাফা (তেল আবিব) এলাকার বেন গুরিওন বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, অভিযানটি একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পরিচালিত হয়েছিল এবং এটি সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ উল্লেখ করেন যে এই অভিযানের ফলে হাজার হাজার ইহুদিবাদী আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামাসের আল-কাসসাম ব্রিগেডের চালানো অভিযানে বেশ কয়েকজন হতাহত
ইজ্জাদ্দিন কাস্সাম ব্রিগেড আজ তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে তারা দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের পূর্বে "আল-কারা" এলাকায় একটি বাড়ি উড়িয়ে দিয়েছে যেখানে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সৈন্যরা অবস্থান নিয়েছিল। ওই বাড়িতে একটি সামরিক অভিযানে শক্তিশালী বোমা হামলা চালানো হয়। কাস্সাম ব্রিগেড আরো জানিয়েছে, 'এই অভিযানে বেশ কয়েকজন ইহুদিবাদী সৈন্য নিহত ও আহত হয়েছে।' এছাড়া ব্রিগেড আরো জানিয়েছে যে আল-কাস্সাম যোদ্ধারা একই এলাকায় একটি সুড়ঙ্গের খোলা অংশ উড়িয়ে দিয়েছে যেখানে ইসরাইলি সৈন্যরা উপস্থিত ছিল এবং তাদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়েছে। বিবৃতি অনুসারে, এই সম্মিলিত অভিযানের পর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো শাসকগোষ্ঠীর মৃত ও আহত সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। এর আগে, আল-কাস্সাম ব্রিগেড উত্তর গাজা উপত্যকায় অবস্থিত বেইত লাহিয়া শহরের পশ্চিমে আল-আতাত্রাহ এলাকায় বোমা ও রকেট হামলা চালিয়ে তাদের জটিল অভিযানের ঘোষণা দেয় এবং ঘোষণা করে যে তারা বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যা ও আহত করেছে।
ইসরাইলি সরকার গাজায় ৯টি পদাতিক এবং সাঁজোয়া ব্রিগেড মোতায়েন করেছে
অবরুদ্ধ গাজায় ভারী বিমান হামলা অব্যাহত থাকায় এবং জ্বালানি ও সাহায্যের অব্যাহত অবরোধের আলোকে মানবিক সংকট আরও তীব্রতর হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলেও দখলদার সেনাবাহিনী সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। ইসরাইলি গণমাধ্যম ঘোষণা করেছে যে, গাজায় স্থল অভিযান সম্প্রসারণের কয়েকদিন আগে নেওয়া সিদ্ধান্তের পর সামরিক অভিযানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শাসকগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী সমস্ত পদাতিক এবং সাঁজোয়া ব্রিগেডকে অবরুদ্ধ এলাকায় নিয়ে এসেছে। সামরিক সূত্রগুলো ইসরাইলি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে যে গত ২৪ ঘন্টায় গাজায় নয়টি পদাতিক এবং সাঁজোয়া ব্রিগেড পাঠিয়েছে শাসকগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী।
ইহুদিবাদী সরকার: আমরা হামাসকে পরাজিত করতে পারব না
গাজায় ইহুদিবাদী অভিযান এমন এক সময়ে শুরু হয়েছে যখন কিছু ইসরাইলি কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে সেনাবাহিনী গাজা যুদ্ধে সম্ভাব্য সকল উপায় চেষ্টা করেছিল কিন্তু হামাসকে তারা পরাজিত করতে পারেনি। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক আভি ইসখারভ এক বিবৃতিতে বলেছেন, "যারা আশা করেন যে অপারেশন গিডিয়নস রথের ফলাফল আসবে এবং এই অভিযান গত বছর এবং সাত মাসের ফলাফলের বিপরীত হবে, তাদের আমরা বলছি যে ব্যর্থতা এবং হতাশার সম্ভাবনা বেশি।" তিনি আরো বলেন, "হামাস আত্মসমর্পণ করবে না এবং বন্দীদের মুক্তি মেনে নেবে না। মন্ত্রিসভা এবং সেনাবাহিনীর যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নতুন কিছুই ঘটেনি।"
এই প্রসঙ্গে ইহুদিবাদী সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ লিকুদ দলের নেসেটের সদস্য অমিত হালেভিকে উদ্ধৃত করে নেতানিয়াহু এবং ইসরইল কাটজের সমালোচনা করে লিখেছে, 'এটি একটি ধূর্ত যুদ্ধ; যুদ্ধের সাফল্য সম্পর্কে আমাদের মিথ্যা বলা হয়েছিল,আমরা ২০ মাস ধরে একটি ব্যর্থ যুদ্ধ পরিকল্পনায় আছি এবং ইসরাইল হামাসের সাথে যুদ্ধ শেষ করতে অক্ষম।'
পার্সটুডে/এমবিএ/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।