বাহরাইনের শীর্ষ আলেম গৃহবন্দি: বিরাজ করছে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i38582-বাহরাইনের_শীর্ষ_আলেম_গৃহবন্দি_বিরাজ_করছে_শ্বাসরুদ্ধকর_অবস্থা
বাহরাইনের প্রখ্যাত শিয়া আলেম শেখ ঈসা কাসেমের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনীর ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাস ও গুলির আঘাতে বহু মানুষ হতাহত হওয়া ছাড়াও শেখ ঈসা কাসেমের বাড়ির প্রবেশ পথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
মে ২৪, ২০১৭ ১৭:৫৯ Asia/Dhaka

বাহরাইনের প্রখ্যাত শিয়া আলেম শেখ ঈসা কাসেমের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনীর ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাস ও গুলির আঘাতে বহু মানুষ হতাহত হওয়া ছাড়াও শেখ ঈসা কাসেমের বাড়ির প্রবেশ পথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পর শেখ ঈসা কাসেমের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বাহরাইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই শিয়া ধর্মীয় নেতার সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের পর তাকে এখন গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আমেরিকা ও সৌদি আরবের সবুজ সংকেত পেয়েই শেখ ঈসা কাসেমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আরব শাসকদের উপস্থিতিতে আরব-আমেরিকান ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠকের প্রথম ফল হিসাবে বাহরাইনের এই প্রখ্যাত শিয়া আলেমকে গৃহবন্দি করে রাখার ঘটনা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

বাহরাইনের আলে খলিফা সরকার ২০১১ সাল থেকে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে গণআন্দোলন দমন করে আসছে। সরকার বিরোধী চলমান গণআন্দোলনে সেদেশের ধর্মীয় নেতারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ কারণে অনেক সম্মানিত আলেমকেও নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার ও জুলুম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। শেখ ঈসা কাসেম বাহরাইনের মানুষের খুবই প্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন ধর্মীয় নেতা। গত ছয় বছর ধরে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলন করার জন্য জনগণকে পরামর্শ দিয়ে এসেছেন। কিন্তু তাই বলে সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কখনো নীরব থাকেননি।

বাহরাইনের স্বৈরসরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েও গণআন্দোলন দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের ধারণা নেতাদেরকে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারলে জনগণের প্রতিবাদ আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়া যাবে। এ কারণে শেখ ঈসা কাসেমকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে আলে খলিফা সরকার। এ লক্ষ্যে প্রথম  পদক্ষেপ হিসাবে সরকার গত বছরের জুনে জনপ্রিয় এই ধর্মীয় নেতার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। অবৈধ অর্থ আয়, বিদেশি স্বার্থ রক্ষা, সহিংসতায় ইন্ধন যোগানো, সাম্প্রদায়িক সংঘাত বাধানো সর্বপরি জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে আলে খলিফা সরকার।

সরকার নিয়ন্ত্রিত আদালত কিছু দিন আগে শেখ ঈসা কাসেমকে এক বছরের জেল ও তার মালামাল জব্দ করার নির্দেশ দেয়। ফলে বাহরাইনের জনগণ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে। বাহরাইনের পরিস্থিতির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, সৌদি আরব ও আমেরিকার সবুজ সংকেতে আলে খলিফা সরকারের সহিংস আচরণ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন পদক্ষেপের কারণে দেশটি ক্রমেই আরো সংঘাত ও জটিলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাহরাইনের নিরাপত্তা বাহিনী গণআন্দোলন দমনের জন্য ব্যাপকহারে গ্রেফতার ও নির্যাতন চালাচ্ছে এবং এ পর্যন্ত বহু মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে সেখানে স্বাশরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। বাহরাইন সরকার এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসাবে কুখ্যাতি অর্জন  করেছে।

শেখ ঈসা কাসেমকে গৃহবন্দী করে সরকার জনগণ থেকে তাকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।  বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে সরকার ও জনগণের মধ্যকার ব্যবধান আরো বাড়বে এবং গণআন্দোলন তীব্রতর হবে। #     

পার্সটুডে/মো. রেজওয়ান হোসেন/২৪